টানা বৃষ্টিতে জল উপচে পড়ছে পুকুরের। তাতেই ফলন কমেছে পদ্মের। এমনটাই জানাচ্ছেন চাষিরা।
রবিবার, আজ লক্ষ্মীপুজো। চাহিদার তুলনায় বাজারে পদ্মফুলের আমদানি কম থাকায় বাজার দর ছিল চড়া। শনিবার পদ্মকুঁড়িও ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ক’দিন আগেই দুর্গা পুজোয় অবশ্য কিছুটা হলেও জোগান ছিল পদ্মের। দামও ছিল সাধ্যের মধ্যে—১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতিটি।
সাধারণত বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই শুরু হয়ে যায় পদ্মের বাজার। তখন অবশ্য অতিবৃষ্টি ছিল না। তাই খুশি ছিলেন পদ্মচাষিরা। কিন্তু টানা বৃষ্টি শুরু হতেই মাথায় হাত পড়ে চাষিদের। প্রতিটি পুকুর ভরে যায় জলে। জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের প্রায় ১২টি গ্রামের ৩৫টি পুকুরে এ বারে হয়েছে পদ্মচাষ। সাগরদিঘির বন্যেশ্বর, মোরগ্রাম, খড়গ্রাম, কান্দির পুকুরগুলিতেও পদ্ম ফলেছিল নজরকাড়া। তাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। জামুয়ার বাসিন্দা জয়দেব ফুলমালি দীর্ঘদিন ধরেই পদ্মচাষ করেন। তিনি বলছেন, “এখন মাছ চাষের জন্য পুকুর লিজে নেওয়ায় টান পড়েছে পদ্মচাষেও। তবু এ বার সাতটি পুকুরে পদ্ম চাষ করেছি। গত দু সপ্তাহ ধরে অতিবৃষ্টিতে পদ্মচাষ শেষ। এখন পুকুরে কুঁড়ি পড়ে রয়েছে। বাজার ধরতে তাই তুলে এনেছিলাম।”
চৈত্র মাসের শেষ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত প্রায় ৮ মাস ধরে প্রায় ৪৫টি পরিবার পদ্ম চাষকেই প্রধান জীবিকা করে বেঁচে রয়েছে এই এলাকায়। এই ‘পদ্ম ’ভরসায় এবারে কিছুটা হলেও বাদ সেধেছিল পুকুর-সঙ্কটে। এখন ভরা পুকুরে টইটুম্বুর জলই হয়ে উঠেছে পদ্মের পথে কাঁটা।
সেণ্ডারের নারায়ণ ফুলমালি বলছেন, “সবকটি পুকুরেই ভাল পদ্ম হয়েছিল। আর বেশি পদ্ম ফুটেছে বলেই বিশ্বকর্মার বাজারে দাম ছিল না পদ্মের। খুচরো দর ছিল প্রতিটি ২ টাকা, এক ডজন ১২-১৪ টাকায় বিকিয়েছে। পদ্মের চাহিদা ছিল, জোগানও ছিল ভাল। এখন জোগান নেই , তাই দাম আকাশ ছোঁয়া। বহুদিন পর এত চড়া দাম উঠল পদ্মের।”
শনিবারের পরে রবিবার সকালেও পদ্মফুলের দাম বাড়বে বলেই আশায় পদ্মচাষিরা।