—প্রতীকী চিত্র।
এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে।
মাদক পাচার কাণ্ডে ধৃতকে জেরা করতে গিয়ে পাওয়া গেল ছিনতাইয়ের পান্ডার হদিস। মাসখানেক আগে নবদ্বীপে এক ব্যবসায়ী ব্যাঙ্ক থেকে তিন লক্ষ টাকা তুলে বাড়ি ফেরার সময়ে ওই টাকা ছিনতাই হয়েছিল।
ওই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। কিন্তু মাদক পাচারকারী হিসাবে ধৃত অর্জুন দুসাদকে জেরা করতে গিয়ে পুলিশের চোখ কপালে। তারা যে ছিনতাইয়ের কিনারা করতে উঠে-পড়ে লেগেছে, ওই ছিনতাইয়েরও মূল পান্ডা অর্জুন দুসাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর দুপুরে নবদ্বীপে সাহানগরের বাসিন্দা সমীর গোস্বামী তাঁর নির্মীয়মাণ বাড়ির শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বৌবাজার শাখা থেকে তিন লক্ষ টাকা তোলেন। সঙ্গে ছিল কয়েক ভরি সোনার গয়না। সে সব নিয়ে সমীর ও এবং তাঁর এক আত্মীয় টোটোয় করে বাড়ি ফিরছিলেন। দুই মোটরবাইক আরোহী আগে থেকেই বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিল। সমীর টোটো থেকে নামতেই বাইক আরোহীদের এক জন আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে টাকা ও গয়না ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তার পরেই বাইকটি ঝড়ের গতিতে উধাও।
দিনে-দুপুরে নবদ্বীপে এমন কাণ্ডে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। পুলিশ হন্যে হয়ে ছিনতাইকারীদের খুঁজলেও কোনও হদিস মেলেনি। ইতিমধ্যে গত ৯ নভেম্বর বেশি রাতে নবদ্বীপধাম স্টেশন থেকে এক মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অর্জুন দুসাদ নামে ওই পাচারকারীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। পরের দিন তাকে নবদ্বীপ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে তদন্তের স্বার্থে দশ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর আর্জি মঞ্জুর করে।
পুলিশের দাবি, হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে গিয়েই কথায়-কথায় বেরিয়ে পড়ে যে নবদ্বীপের ওই ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল অর্জুন দুসাদ। বস্তুত সে-ই ছিল পান্ডা। এর পরেই তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ে যুক্ত থাকার পৃথক মামলা রুজু করা হয়। বৃহস্পতিবার মাদক পাচারের মামলায় তার পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়। ওই দিনই তাকে আদালতে পেশ করে পুলিশ ছিনতাই কাণ্ডে জেরার জন্য ফের দশ দিনের হেফাজত চায়। আদালত নয় দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।
পুলিশ জানায়, অর্জুন দুসাদ উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির সীমানা ঘেঁষা বীজপুরের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় একাধিক অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। নবদ্বীপ থানার আইসি কল্লোলকুমার ঘোষের দাবি, “ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্তে নেমে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও নানা তথ্য সংগ্রহ করেছি। মাদক পাচারের মামলায় জন্য ধৃতকে জেরা করতেই কিছু-কিছু বিষয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। শেষে জেরার মুখে ধৃত স্বীকার করেছে যে সে ছিনতাইয়ের ঘটনায় যুক্ত ছিল। আর কারা যুক্ত ছিল তা জানতে তাকে জেরা করা হচ্ছে।’’