দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিকে হয়ে গিয়েছে। কানে ফোন নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্সের চালকও। নিজস্ব চিত্র
সাকুল্যে ২৯ সেকেন্ডের ফোন। দু’বছর আগে সেই ভোরের ফোনেই নিঃশব্দে উড়ে এসেছিল মৃত্যুর ঠিকানা। ভান্ডারদহ বিলের কালো জলে বাসের সঙ্গেই তলিয়ে গিয়েছিল ৫৩ জন যাত্রী। মারা গিয়েছিলেন ৪৪ জন। চালকের কানে ফোন দেখলে পুলিশি তৎপরতা বেড়েছিল তার পরেই। জেলা জুড়ে শুরু হয়েছিল ধরপাকড়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই তৎপরতা যেমন ঝিমিয়ে গিয়েছে, তেমনই ফিরে এসেছে পুরনো অভ্যাস।
এক হাতে গাড়ির হুইল, অন্য হাতে মোবাইল— পথে ঘাটে এমন চালকের সংখ্যা নিত্য চোখে পড়তে শুরু করেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল কানে থাকায় ২৬৪ জন চালককের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা ট্রাফিক পুলিশ। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য আটক করে জরিমানা করা হয়েছে ২৬৫ জনকে। তবু চেনা অভ্যাসে দাঁড়ি পড়েনি। সেই তালিকায় যাত্রী বোঝাই বাস চালক থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের চালক, স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে ঘরে ফেরা পুলকার থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক— বাদ নেই কেউই। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলছেন, ‘‘মোবাইল কানে গাড়ি চালানোর ব্যাপারে চালকেরা নিজেরা সচেতন না হলে, আইন দিয়ে তা আটকানো বড় দুরূহ। তবু, আমরা নিরন্তর চেষ্টা করছি। চালকদের বারে বারে সচেতন করা হচ্ছে।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল সাহা বলছেন, ‘‘বালিরঘাটের দুর্ঘটনা আমাদের বড় শিক্ষা দিয়ে গেছে। আমরা নির্দেশিকা জারি করেছিলাম, বাস চালকেরা যেন মোবাইল পকেটে নিয়ে স্টিয়ারিংয়ে না বসেন। বাস মালিক এবং কর্মচারিদেরও এ ব্যপারে নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে। তবু সবাই যে মেনে চলছেন এমন দাবি করতে পারি না।’’