Mysterious death

কী ভাবে মৃত্যু কিশোরীর? না জেনেই শংসাপত্র দিলেন চিকিৎসক, আঙুল তৃণমূলের দিকে

ওই কিশোরীর মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৮:২০
Share:

জানা গিয়েছে, চিকিৎসকেরা নাবালিকাকে মৃত ঘোষণা করলেও পুলিশকে কোনও রকম খবর দেননি। ছবি: প্রতীকী

তৃণমূল নেতার এক ফোনে বাড়িতে বসেই মৃত্যুর শংসাপত্র দিলেন এক চিকিৎসক! তা-ও আবার ১০০ থেকে ২০০ টাকার বিনিময়ে! এমন অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার শান্তিপুরে। ১৪ বছরের এক কিশোরীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এমন দাবিই করছেন স্থানীয়েরা। প্রশ্নের মুখে প্রশাসনও। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, এ রকম কিছু জানা নেই তাঁর। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই কিশোরীর মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

Advertisement

সূত্রের খবর, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। শান্তিপুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। জানা গিয়েছে, চিকিৎসকেরা নাবালিকাকে মৃত ঘোষণা করলেও পুলিশকে কোনও রকম খবর দেননি। মৃতদেহ ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। এর পর নৃসিংহপুর কালনা ঘাটের ঠিক পাশে একটি শ্মশানে মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়াই দাহ করা হয় ওই নাবালিকাকে। পঞ্চায়েতের তরফে যাঁকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়, তিনিও তখন শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর অনুপস্থিতিতেই ওই নাবালিকার মৃতদেহ দাহ করা হয় বলে খবর।

ঘটনা জানাজানি হতেই চাপে পড়ে মৃতের পরিবার। এর পর স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছ থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র বার করে তারা। এই প্রসঙ্গে ওই চিকিৎসক বাসুদেব বণিক বলেন, ‘‘এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার ফোন করেছিলেন ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য। পঞ্চায়েত সদস্যের বিশ্বাসের উপরেই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়, এর আগেও এ রকম হয়েছে। তৃণমূল নেতারা ফোন করলেই নাকি তিনি মৃত্যুর শংসাপত্র দিয়ে দেন। তার জন্য কোনও বৈধ কাগজপত্রও লাগে না। চিকিৎসকের অভিযোগ, নেতাদের কথা না শুনলে তাঁর ডাক্তারি বন্ধ হয়ে যাবে। স্থানীয়দের দাবি, ওই চিকিৎসক কোনও দিন রোগী দেখেননি। অল্প টাকা নিয়ে মৃত্যুর শংসাপত্র দেন।

Advertisement

এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে। ওই নাবালিকার দেহ কেন পাঠানো হল না ময়নাতদন্তে? অভিযোগের আঙুল উঠছে শান্তিপুর হাসপাতালের দিকেও। শান্তিপুর হাসপাতালের সুপার তারক বর্মণ বলেন, ‘‘হাসপাতালে এ ধরনের কোনও মৃত্যুর খবর আমার কাছে নেই, খোঁজ নিয়ে দেখব। যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুতেই ময়নাতদন্ত হয়।’’

বিরোধীদের প্রশ্ন, ১৪ বছরের কিশোরীর কী ভাবে মৃত্যু হল, খতিয়ে দেখা হল না কেন? তা না করেই কী ভাবে চিকিৎসক মৃত্যুর শংসাপত্র দিলেন? এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান শোভা সরকার বলেন, ‘‘এমন ঘটনা জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement