পুরভোটে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বামেরা। সোমবার রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের দিনেই গুচ্ছ অভিযোগ উঠেছিল। বুথ দখল, জ্যাম, ছাপ্পার অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সোমবার, নির্বাচনের পরের দিন পথে নামল বামেরা। রানাঘাট, কল্যাণী এবং কৃষ্ণনগর (সদর) মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করা হল। হরিণঘাটা ও শান্তিপুরে বেরোল প্রতিবাদ মিছিল। একাধিক জায়গায় পুনর্নির্বাচনের দাবিও তুলেছেন তারা।
কৃষ্ণনগরের পাশাপাশি শান্তিপুর, রানাঘাট, চাকদহ, হরিণঘাটার মতো নানা পুরসভায় বুথ দখল এবং ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে সরব হয়েছিল বামেরা। শান্তিপুর শহরের একাধিক বুথে দেখা গিয়েছে বহিরাগতদের। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তারা কখনও জানিয়েছে, ভোট দিতে এসেছে। আবার কখনও দাবি করেছে, ভোটার কার্ড ফেলে এসেছে। ‘লাইনে দাঁড়াননি কেন?’ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে বুথ ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়েছেন। একই লোককে বারবার ভোটের লাইনেও দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। বুথের ভিতরেও ইভিএমের কাছে দেখা গিয়েছে অনেককেই। সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন তুললে পাল্টা জবাব এসেছে, “আমাদের কাজ আমাদের করতে দিন, আপনারা আপনাদের কাজ করুন।”
মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের বুথে আক্রান্ত হয় পুলিশ ও সংবাদমাধ্যম। পরে লাঠিচার্জ করে বহিরাগতদের সরায় পুলিশ। গ্রেফতার হয় ৬ জন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আবার তাহেরপুরেও সিপিএম প্রার্থীকে বার করে দিয়ে বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছে। হরিণঘাটা, কৃষ্ণনগর, চাকদহ, রানাঘাটেও বহিরাগতদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ ও বুথ দখল নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এই ভোটকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে এ দিন পথে নামে বামেরা। রানাঘাট, কল্যাণী ও কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসকের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ হয়। হরিণঘাটা বাজারে মিছিল করে থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফ। সন্ধ্যায় বামেদের তরফে নবদ্বীপ ও শান্তিপুর শহরে প্রতিবাদ মিছিল বার হয়। পরে শান্তিপুরের ডাকঘর মোড়ে পথ অবরোধ করা হয়।
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে দাবি করেন, “রাজ্যের সর্বত্র বুথ দখল, ছাপ্পা এবং সন্ত্রাসের মধ্যে ভোট হয়েছে। আমরা জেলার একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করছি।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় পাল্টা বলেন, “প্রতি নির্বাচনের পরেই এ সব ওরা বলে থাকে। অনেক জায়গায় ওরাও ঝামেলা করেছে। এখন হেরে যাবে বুঝে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এ সব করছে।”