—প্রতীকী চিত্র।
গত কয়েকটি ভোটে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে বামেদের ভোটব্যাঙ্ক। বাম ভোট যতটা কমেছে ততটাই বেড়েছে বিজেপির ভোট। সেই হারানো ভোট ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনা চ্যালেঞ্জ বামেদের কাছে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়াতে বাম-কংগ্রেস জোট ৪টি আসন পেয়েছিল। খালি হাতে ফিরেছিল বিজেপি। তবে তিন বছর পরের লোকসভা ভোটেই সেই ছবি অনেকটাই পাল্টে যায়। বাম ও কংগ্রেস আলাদা ভাবে লড়াই করে। কৃষ্ণনগর লোকসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও রানাঘাট লোকসভা ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। সঙ্গে উপনির্বাচনে জেতে কৃষ্ণগঞ্জ। নদিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের বিধানসভাগুলিতে ছিল বিজেপির দাপট। তৃণমূলের ভোট যতটা না কমেছে তার থেকেও বেশি কমেছে বাম ভোট। আর ততটাই শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে বিজেপির।
২০২১ এর বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস এক সঙ্গে লড়াই করে খালি হাতে ফেরে। নদিয়া থেকেই নয়টি আসনে জেতে বিজেপি। পুরভোটে নদিয়ায় হারানো জমি অনেকটাই পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল। তাহেরপুর পুর বোর্ড দখল করে বামেরা। তবে জেলার বাকি পুরসভায় খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। তাহেরপুরের দৃষ্টান্তকে সামনে রেখেই এ বার গ্রামের ভোটে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নামছে সিপিএম।
তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে সমাজমাধ্যমকে হাতিয়ার করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। লোকসভা এবং বিধানসভার ভোট হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিষয়টি আলাদা। সেখানে অনেকটাই গুরুত্ব পায় স্থানীয় স্তরের সমস্যা। নিচুতলার সংগঠনের শক্তিও সেখানে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। একেবারে বুথস্তর থেকেই হারানো ভোট ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে সিপিএমে। দলের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতা-কর্মীরাও অনেকটাই সক্রিয় হয়ে দলের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। আন্দোলনের পথে নেমে হারানো ভোট ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনার রাস্তা খুঁজছে সিপিএম।
দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, "তৃণমূল এবং বিজেপি-র প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে। বিকল্প হিসেবে বামেদের দিকেই তাঁরা ঝুঁকছেন। তাহেরপুরের ফল তার প্রমাণ।" আবার নদিয়া জেলা পরিষদের বিদায়ী বোর্ডের সহ সভাধিপতি দীপক বসু বলছেন, "সিপিএম তো আসলে তৃণমূলকে ঠেকাতে নিজেদের ভোট উৎসর্গ করেছিল বিজেপিকে। তাতে ওরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। ওদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার কোনও প্রভাব তৃণমূলের উপর পড়বে না।"
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, "তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষ বামেদের নয় বিজেপির উপরে ভরসা রাখছেন, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে আগেই। এ বারও তাই হবে।"