ছবি: পিটিআই।
সরকারি নির্দেশনামায় লকডাউনের তৃতীয় পর্বে দোকানবাজার খোলার সময় নির্ধারিত হয়েছে সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা। কিন্তু ক্রেতার ভিড় এতটাই বাড়ছে যে সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে জেলার একাধিক জায়গায় নির্ধারিত সময়ের আগেই দোকান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বণিক মহল।
নবদ্বীপ শহরের পোড়ামাতলা, বড়বাজার, বউবাজার, বাজাররোড বা করিমপুরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড অঞ্চল। ভিড় ভেঙে পড়ছে সর্বত্র। সাতসকালে চাকদহের শিঙের হাট মোড় থেকে থানা পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে ফের বসছে বাজার। অসম্ভব ভিড়। বাসস্ট্যান্ড, মণীন্দ্র হাটের জনবহুল অঞ্চল দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন।
ক্রেতাবিক্রেতার অনেকেই আবার মাস্কহীন। টোটো, বাইক, মোটরভ্যান, সাইকেলের যানজটের চেনা ছবি স্বাভাবিক সময় থেকে কিছুই আলাদা নয়। সেই সঙ্গে চলছে অকারণে নানা বয়সের মানুষের অবাধ চলাচল। দু’শো টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কে যাওয়া বা পিঠে বইয়ের ব্যাগ ঝুলিয়ে দলবেঁধে রাস্তায় নেমে গল্প করা—সবই চলছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বহিরাগত ক্রেতার ভিড়। জেলার সব শহরই চারপাশে গ্রাম দিয়ে ঘেরা। লকডাউনের শিথিলতার সুযোগে সেখান থেকে দলে-দলে মানুষ প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছেন শহরের দোকানবাজারে। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “বাজারহাটে যে ছবি আমরা দেখছি তাতে আমরা উদ্বিগ্ন।’’
এই অবস্থায় নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুপুর দু’টোর পর নবদ্বীপে ওষুধের মতো জরুরি পণ্য ছাড়া কোনও দোকানই খোলা থাকবে না। আপাতত নবদ্বীপে মুদিখানা খোলা থাকবে সকাল ৭টা- বেলা ১২টা পর্যন্ত। মনোহারি দোকান ৮টা- ২টো। রেডিমেড, জামাকাপড় এবং জুতোর দোকান ৯টা-২টো। পিতলকাঁসার জিনিসপত্র ৯টা– ২টো এবং সোনার দোকান ১০টা থেকে ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে।
একই ভাবে সন্ধ্যা ছ’টার বদলে দুপুর তিনটের সময় বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। কমিটির সভাপতি সুবোধ রায় বলেন, “মঙ্গলবার থেকে করিমপুর বাজারের মুদি থেকে বস্ত্র ছাড়াও ছোট বড় সমস্ত দোকান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তবে এখনই ১০টা-৬টা সময়ের বদল ঘটাচ্ছেন না চাকদহের ব্যবসায়ীরা। জেলা সদর কৃষ্ণনগরে সরকার নির্ধারিত সময়েই দোকানপাট খোলা থাকছে। ওই প্রসঙ্গে নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলেন, “কৃষ্ণনগরে বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন, এখানে সব দোকান এক দিন অন্তর পালা করে খুলছে। দোকানের ভিতরে এক জন করে ক্রেতা প্রবেশ করছেন। মাস্ক পড়া এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক হয়েছে। বাজারে ঢোকার সময় থার্মাল গানের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”