ছবি: সংগৃহীত।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ফের দু’জনের কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ল। আক্রান্ত ওই দুই যুবককে শনিবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘুনাথগঞ্জের নওদা এবং মাড়গ্রামের খেশড় এলাকার বাসিন্দা ওই দু’জনেই ভিন জেলায় কাজে গিয়েছিলেন। দু’জনের কারও করোনা-উপসর্গ ছিল না বলেই জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে, গ্রামে ফেরার পরে স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী তাঁদের লালারস পরীক্ষা করা হয়। শনিবার তার ফল বেরোতেই দেখা যায় দু’জনেই করোনা আক্রান্ত।
তবে, এ দিনই করোনা আক্রান্ত জেলার অন্য চার জনকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘করোনা পজ়িটিভ যে চার জন ভর্তি ছিলেন তাঁরা সুস্থ হয়েছেন। এ দিন তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিন তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধও দেওয়া হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত বিধি অনুসারে নমুনা সংগ্রহের পর থেকে ১০ দিন পর্যন্ত করোনা-উপসর্গ না থাকলে রোগীকে ছুটি দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার আর প্রয়োজন নেই। সেই নির্দেশ মেনেই এ দিন ওই চার জনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘আগে যে চার জনের করোনা পজ়িটিভ পাওয়া গিয়েছিল তাঁরা সুস্থ হয়ে এ দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এটা খুবই স্বস্তির খবর। নতুন আক্রান্ত দু’জনকে আপাতত হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।’’
১০ মে সুতিতে দিল্লি ফেরত তিন জন বিড়ি ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় হাসপাতালের এক নার্সিংকর্মীর করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছিল। তবে, শনিবার যে যুবকের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে তিনি পরিযায়ী শ্রমিক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলা এলাকায় কাজ করতেন তিনি। তাঁর লালারসের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর পরিবারের সবারই লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে গ্রামে ফেরার পরে কোন কোন এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। মাড়গ্রামের করোনা আক্রান্ত যুবক কলকাতার সল্টলেকে রাজমিস্ত্রির শ্রমিকের কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। ওই যুবক এবং তাঁর চার সহকর্মী গ্রামে ফেরার পর স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের লালারস পরীক্ষার জন্য খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই চারজনেরই করোনাভাইরাসের কোন উপসর্গ ছিল না বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তারা ওই যুবকের সংস্পর্শে আসা তাঁর পরিবার ও পড়শিদের মোট ২৮ জনকে চিহ্নিত করে খড়গ্রাম ব্লকের কর্মতীর্থ কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠিয়েছেন। খেঁশড় গ্রামের দলুই পাড়াতে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। মাসখানেক আগে সালারের ভুশন্ডি গ্রামে এক বৃদ্ধের শরীরের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। জেলায় সেটাই ছিল করোনার প্রথম থাবা। তাঁরও কলকাতা যোগ মিলেছিল। ক্যানসার আক্রান্ত ওই বৃদ্ধ কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অনুমান। পরে কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মারা যান তিনি।