উধাও চেনা ভিড়। নিজস্ব চিত্র
দিনকয়েক আগেও সকাল থেকে রোগীর ভিড় চোখে পড়ত। তবে গত কয়েক দিন ধরে সেই চেনা ভিড় উধাও হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রে। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, করোনার ভয়েই অসুখ গুরুতর না হলে তাঁরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পা রাখছেন না।
তবে করোনার আবহে রাতারাতি বদলে গিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চেহারাটা। সূত্রের খবর, গ্রামবাসীরা কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে অযথা যাতে আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন, সেদিকে সর্বদা দৃষ্টি রাখছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীরা। লকডাউনে যাতায়াতের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে আপাতত কয়েক দিন ধরে তাঁরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া আবাসনেই থাকছেন। হরিহরপাড়ার ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগেও প্রতিদিন গড়ে আটশো থেকে সাড়ে আটশো, কোনওদিন বা হাজারের বেশি রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসতেন। হরিহরপাড়া, নওদা, দৌলতাবাদ থানার এলাকার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ নির্ভর করেন এই হাসপাতালের ওপর। তবে করোনার সংক্রমণ এবং লকডাউন শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে রোগীর সংখ্যা কমেছে। পাশাপাশি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের আনাগোনা বেড়েছে লকডাউনে।
তাতে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আউটডোরে রোগীর চাপ কিছুটা কমেছে। বর্তমানে বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য গড়ে ২০০-২৫০ জন রোগী আসছেন বলে জানান হাসপাতালের এক চিকিৎসক। তবে আউটডোরে ভিড় এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রোগীদের অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে। ভিড় যাতে না হয়, সে জন্য তিন-চার জন চিকিৎসক একসঙ্গে আউটডোরে রোগী দেখছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগের পাশাপাশি অন্তর্বিভাগ ও জরুরি পরিষেবাও চালু আছে। চিকিৎসকরা জানান, খুব জরুরি না হলে রোগীরা হাসপাতাল মুখো হচ্ছেন না। তাছাড়া, গুরুতর অসুস্থ ছাড়া অন্য রোগীরা ভর্তিও হতে চাইছেন না।
হাসপাতালে রয়েছেন পাঁচজন চিকিৎসক, ন’জন নার্স-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মী। হরিহরপাড়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তৎপর। তাঁরা হাসপাতালের আবাসনেই থাকছেন। তবে রোগীর সংখ্যা কমেছে।’’ তিনি জানান, হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডের জন্য রক্ত, কফ পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী এবং এএনএম কর্মীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে করোনা নিয়ে সচেতন করছেন। কারও জ্বর-সর্দিকাশি হলে হাসপাতালে আসতে বলা হচ্ছে।’’