Coronavirus

কল্যাণী কোভিড হাসপাতালে ইতি পড়েনি ডিউটি জটে

স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতাল-সহ জেলার প্রায় সব সরকারি হাসপাতাল। একমাত্র কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ (জেএনএম) হাসপাতালটি রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

জেলার একমাত্র কোভিড হাসপাতাল কল্যাণীর এসএনআর কার্নিভালে চিকিৎসকদের ডিউটি নিয়ে অচলাবস্থা কাটার কোনও ইঙ্গিত এখনও নেই। বরং ডিউটি রস্টার নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতভেদ বেড়েই চলেছে। আজ থেকে নতুন রস্টার চালু হওয়ার কথা। কিন্তু এই বিবাদের জেরে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকেরা ডিউটি করবেন কিনা, বা করলেও কত জন কত দিন করবেন তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতাল-সহ জেলার প্রায় সব সরকারি হাসপাতাল। একমাত্র কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ (জেএনএম) হাসপাতালটি রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। জেলার কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা চালানোর দায়িত্বে জেলা হাসপাতাল ও জেএনএমের মধ্যে কোন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বেশি থাকবেন, তা নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত। বিবাদমান দু’পক্ষই একাধিক রস্টার তৈরি করছেন। এবং দু’পক্ষেরই দাবি, তাঁদের লোকবল কম। কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসক দিলে নিজেদের হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ করতে হবে। দু’তরফে চিঠির লড়াইও হয়েছে একাধিক বার। বৈঠকও বসেছে। কিন্তু সমাধানসূত্র বের হয়নি।

এরই মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর কৃষ্ণনগরের সারি হাসপাতাল ও কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে ডিউটির জন্য রস্টার তৈরি করে। ১৩ মে পর্যন্ত ওই দুই হাসপাতালে অন্য কোন হাসপাতালের কত জন চিকিৎসক ডিউটি করবেন তা সেখানে বলা হয়। সেই মতো আজ, রবিবার থেকে ওই দুই হাসপাতালে জেএনএমের চিকিৎসকদের ডিউটি করার কথা। কিন্তু সেখানেই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

Advertisement

জেএনএমের চিকিৎসকেরা এখনও কোভিড হাসপাতালে কাজ না করার ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। প্রথম থেকেই তাঁদের দাবি ছিল, স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তাদের থেকে বিশেষজ্ঞ বেশি। তাই কোভিড হাসপাতালের দায়িত্ব জেলা হাসপাতালকেই নিতে হবে। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, সরকারি নির্দেশ মতো তাঁরা এত দিন সবই করছেন। ফিভার ক্লিনিক চালানো, সন্দেহভাজন কোভিড রোগীকে দেখভাল, তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ, মোবাইল টিম তৈরি— সবই হয়েছে। তারপরেও কোভিড হাসপাতালে ডিউটির জন্য তাঁদের উপর অহেতুক জেলা স্বাস্থ্য দফতর চাপ তৈরি করছে।

জেএনএমের চিকিৎসকদের দাবি, কলেজের তরফে পুরো বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জানানো হয়েছে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাঁরা নেবেন। জেএনএমের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কৃষ্ণনগরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে বৈঠকের পরে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জেএনএমের তরফে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, কোভিড হাসপাতাল কল্যাণী থেকে কৃষ্ণনগরে স্থানান্তরিত করা হোক। এর পরে স্বাস্থ্যভবন যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মানা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কোনও সিদ্ধান্ত মানা হবে না।

যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পাল্টা জানানো হচ্ছে, জেএনএমের চিকিৎসকেরা কোভিড হাসপাতালের ডিউটি এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা চিকিৎসকের কর্তব্য পালন করছেন না এবং পেশাদারিত্বের পরিচয় দিচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, রস্টার অনুযায়ী জেএনএমের কোন কোন চিকিৎসক কোভিডে ডিউটি করবেন তার কোনও তালিকাও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঠানো হয়নি। এটা অন্যায়। এরই মধ্যে অবশ্য কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে নৈহাটির বাসিন্দা যে মহিলা কোভিড-সংক্রমণের জন্য ভর্তি রয়েছেন তাঁর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হচ্ছে বলে শনিবার হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement