লকডাউন! ফাইল চিত্র
আশঙ্কা ছিল স্বাস্থ্য দফতরের। তবে তোয়াক্কাহীন ডোমকলের কোনও আতঙ্ক ছিল না।
সামাজিক দূরত্ব বিধির থোড়াই কেয়ার! লকডাউনে হাঁফিয়ে ওঠা ডোমকলে গত কয়েক দিনের বাজার-হাট, রাস্তাঘাট দেখলে মনে হওয়ার জো ছিল না যে করোনাভাইরাসের ছায়া পড়েছে এ তল্লাটেও। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘তার ওপর, কাতারে কাতারে পরিযায়ী শ্রমিক এলাকায় ফিরছেন, কিন্তু হোম কোয়রান্টিনের নাম করে তাঁরা নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাটে-ঘাটে বাইক হাঁকিয়ে কিংবা সান্ধ্য আড্ডায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর পরেও সংক্রমণ ছড়াবে না, আশা করব কী করে!``
ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে, সোমবার দু’জনের কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পর, মঙ্গলবার করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলল আরও তিন গ্রামবাসীর লালারস পরীক্ষায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এ দিন যে তিন জনের লালারসে কোভিড-১৯ মিলেছে তাঁরা আক্রান্ত প্রথম দু’জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তা হলে কি গোষ্ঠী সংক্রমণের ছায়া পড়ল ডোমকলে? স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য সে কথা এখনই মানতে চাইছেন না। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, আক্রান্তরা যে বেপরোয়া ভাবে মেলামেশা করেছেন, তাতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। ডোমকল পুরসভা এলাকায় দু’দিনে পাঁচ জন আক্রান্ত হলেও হুঁশ অবশ্য ফেরেনি সাধারণ মানুষের। হাটবাজারে জাঁকিয়ে চলেছে ফল থেকে সব্জির বিকিকিনি, ইদের মুখে বেচাকেনার হাতছানিতে লাগাম টানতে পারছেন না কাপড়জামার ব্যবসায়ীরাও। সামনের দরজা বন্ধ রেখে বেশ কিছু দোকানে পিছনের গেট দিয়ে দেদার বেচাকেনা চলছে। রাস্তাঘাটেও চলাচল প্রায় স্বাভাবিক। অভিযোগ, পুলিশ কিংবা স্থানীয় প্রশাসন সব দেখেও নির্বিকার।
ডোমকল পুরসভার তরফে এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে। কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে বাঁশ দিয়ে। নাগাড়ে চলছে মাইকে প্রচার, কিন্তু কে শোনে কার কথা! জিতপুর-নতুনপাড়া-সহ ডোমকলের চেহারা প্রায় আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই। উৎসবের মেজাজে চলছে কেনাকাটা। রাস্তায় টোটোর ভিড় এমনকি চায়ের দোকানের আড্ডাও বসেছে জাঁকিয়ে। ডোমকলের পুরপ্রধান তৃণমূলের জাফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘মানুষের চলাফেরা, হাটবাজার করা দেখে অবাক হচ্ছি, এত প্রচারেও কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, বিষয়টিতে নজর দিক তারা।’’ ডোমকলের এসিএমওএইচ মামুন রশিদ বলেন, ‘‘নতুন করে ডোমকলে তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন। এঁরা আক্রান্ত পরিবারেরই সদস্য। আমরা কন্টেনমেন্ট জ়োন করে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছি এলাকা। যাঁরা এঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে।’’