প্রতীকী ছবি
পুর উদ্যোগে গড়ে তোলা কোয়রান্টিন সেন্টার আড়াই দিনেই গুটিয়ে ফেলার পরে সেখানকার পরিযায়ী শ্রমিকদের খোঁজ শুরু করল জেলা প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, গ্রামে ফিরে গেলেও ওই শ্রমিকদের খোঁজে স্থানীয় আশাকর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের উপরে নজরদারিও শুরু হয়েছে। তবে, তাঁদের নিয়ে যে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের কপালে, তা আড়াল করছেন না জেলা প্রশাসনের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘উদ্যোগটা মন্দ ছিল না। কিন্তু তা সামাল দিতে না পারায় এখন হ্যাপা সামলাতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুরসভা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে আগাম জানালে ভাল করত।’’
দিন কয়েক আগে, ধুলিয়ান পুরকর্তৃপক্ষ স্থানীয় একটি স্কুলে আচমকাই খুলে বসে কোয়রান্টিন কেন্দ্র। আশপাশের গ্রামে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সেখানে রাখা হয়। কিন্তু কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা ২৪৭ জন শ্রমিক দু’দিনের মাথায় আচমকা ‘বিদ্রোহ’ করে বসে। তাদের মদ এবং ভাল খাবারের দাবি-দাওয়া সামাল দিতে না পেরে ডাকতে হয় পুলিশ। কিন্তু সেই আব্দার ক্রমেই তান্ডবের চেহারা নিলে পুলিশ শেষ পর্যন্ত কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা সব শ্রমিককেই ফিরিয়ে দিয়ে আসে গ্রামে। এলাকার মানুষেরও ওই কোয়রান্টিন সেন্টার করার ব্যাপারে আপত্তি ছিল। শেষ পর্যন্ত নিভৃতবাসের বদলে তাঁরা গ্রামে ফিরে যাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের। তবে, ওই কোয়রান্টিন সেন্টার যিনি উদ্যোগী হয়ে খুলেছিলেন, ধুলিয়ান পুরসভার সেই প্রধান তৃণমূলের সুবল সাহা বলছেন, ‘‘বাড়ি ফিরে গেলেও তাঁদের উপরে নজরদারি চলছে। তাঁদের বলা হয়েছে, ১৪ দিন যেন বাড়িতে একাই থাকেন তাঁরা।’’
এখন প্রশ্ন, তড়িঘড়ি ওই কোয়রান্টিন সেন্টার খোলা হল কেন, কেনই বা সে ব্যাপারে পুরসভাকে জানানো হল না কিছু? মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওটা কোয়রান্টিন কেন্দ্র ছিল না। সেখানে আমরা কাউকে রাখিওনি। জনপ্রতিনিধিরা সেখানে ত্রাণ শিবির করেছিলেন।’’ এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘জেলাজুড়ে ৭০টি কোয়রান্টিন কেন্দ্র খোলা। তাতে ধুলিয়ানের স্কুলের নাম নেই।’’ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় স্বাস্থ্য দফতরের কোয়রান্টিন কেন্দ্র খোলার কথা এবং যাঁরা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু সেখানে ধুলিয়ান পুরসভা নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোয়রান্টিন কেন্দ্র খুলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগামী দিনে যাতে অন্য কেউ বা কোনও সংস্থা এমন কোয়রান্টিন কেন্দ্র খুলে না বসে, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’’