নিজস্ব চিত্র।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার অভিযোগ অতীতে অনেক বার উঠেছে। রবিবারও ট্রলি না-পেয়ে মৃত অখিল সরকারের শ্বশুর কালাচাঁদ সরকার সেই একই অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি জানান, কোথাও ট্রলি না পেয়ে উদভ্রান্তের মতো তিনি যখন কর্তব্যরত নার্সের কাছে সাহায্যের জন্য যান তখন তাঁকে সহযোগিতা করা তো দূরের কথা, তুমুল দুর্ব্যবহার করেন সেই নার্স। তাঁর কাছে ওই ব্যবহার পেয়েই তিনি দিশেহারা হয়ে নিরাপত্তারক্ষাদের কাছে ট্রলির খোঁজ করতে যান এবং সেখানে তাঁদের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ।
নার্সদের কাজে সহমর্মিতা এবং সেবাই মূল ধর্ম। প্রশিক্ষণ শেষে কাজ শুরু করার আগে তাঁরা সেই সেবার শপথও নে। কেন তা হলে মানসিকতায় এই পরিবর্তন? অতি জরুরি সেই পরিস্থিতিতে এক রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করার বদলে নার্স কেন দুর্ব্যবহার করলেন তাঁর উত্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। এমনকি তাঁদের দাবি, ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে তোলপাড় শুরু হলেও অভিযুক্ত নার্সকে নাকি এখনও শনাক্ত করা যায়নি!
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের নার্সিং সুপার মৌসুমী গোস্বামীকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা তিনি বলেন, ‘‘এখন কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার পরে বলব।” তবে হাসপাতালের নার্সদের একটা অংশের দাবি, অতিরিক্ত কাজের চাপ এর অন্যতম কারণ। রোগীর চাপের তুলনায় নার্সের সংখ্যা কম। তার উপরে ওয়ার্ডের পাশাপাশি অন্য অসংখ্য দায়িত্ব সামলাতে হয় তাঁদেরকে। ফলে সবসময় মন-মেজাজ ঠিক রাখতে পারেন না কেউ-কেউ।
প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যবহার নিয়েও। কারণ, এর আগেও একাধিক ঘটনায় রোগীর পরিবারের লোকের গায়ে হাত তুলতে দেখা গিয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের। তা নিয়ে থানা-পুলিশও হয়েছে একাধিক বার। কিন্তু অবস্থার যে পরিবর্তন হয়নি, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল রবিবার। মৃত অখিল সরকারের শ্বশুরকে মেঝেতে ফেলে মারের অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তারক্ষীদের যে ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ করে তার কর্তা ভগীরথ ঘোষ বলেন, “আমরা সবে দায়িত্ব পেয়েছি। আগে কী হয়েছে বলতে পারব না। তবে এটা বলতে পারি, এ বার থেকে যদি এমন ঘটনা কখনও ঘটে তা হলে অভিযুক্ত কর্মীকে সঙ্গে-সঙ্গে বসিয়ে দেওয়া হবে। রবিবার ঘটনায় ইতিমধ্যে এক জনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।”