শিশু ও তার পরিজনেরা। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যুতের অভাবে সরকারি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ উঠল করিমপুরে। শিশুর পরিবারের তরফে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বছর দেড়েকের ওই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়। তাদের বাড়ি হোগলবেড়িয়ার বালিয়াসিসা গ্রামে। তার পরিবারের অভিযোগ, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর জেনারেটর চালাতে দেরি হওয়ায় সময় মতো অক্সিজেন বা নেবুলাইজ়ার চালানো যায়নি। সেই কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
মৃত শিশুর বাবা নির্মল মণ্ডলের অভিযোগ, “আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জেনারেটর চালাতে ওঁদের অনেক বার অনুরোধ করেছি। কিন্তু জেনারেটর চলেনি। শ্বাস নিতে না পেরে আমার মেয়েটা মারা গেল।”
ওই হাসপাতালে জেনারেটর চালানোর দায়িত্ব এক ঠিকাদারকে দেওয়া রয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলেও জেনারেটর চালানো হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে যে শিশুটি মারা গিয়েছে সে ছাড়াও আরও রোগীর ভোগান্তি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের দাবি। ঘটনাটি যখন ঘটছে, হাসপাতাল সুপার মনীষা মণ্ডল তখন নিজের ঘরে ছিলেন না। পরে অভিযোগ পেয়ে আজ, শুক্রবার তিনি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
হাসপাতাল ও রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বাসকষ্ট হওয়ায় এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে দেখে ইঞ্জেকশন দেওয়ার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তখনই অক্সিজেন দেওয়া এবং নেবুলাইজ় করার কথা লিখে দেন। মেরামতির কাজ চলায় বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ও দিকে, হাসপাতালের জেনারেটরের ঘরও বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ।
শিশুটির বাবার অভিযোগ, “জরুরি বিভাগে ডাক্তারবাবু অক্সিজেন ও নেবুলাইজ়ার চালাতে বলার বার বার অনুরোধ করি। এই ভাবে প্রায় ৪০ মিনিট কেটে যায়। কোনও ভাবেই জেনারেটর চালানোর ব্যবস্থা করতে পারিনি। চোখের সামনে খাবি খেয়ে মেয়েটা মরে গেল।”
পরে জেনারেটর চালক রাজু পণ্ডিত অবশ্য দাবি করেন, “আমি শৌচাগারে গিয়েছিলাম। খুব জোর তিন থেকে চার মিনিট দেরি হয়ে থাকতে পারে, তার বেশি নয়। দীর্ঘক্ষণ জেনারেটর চালানো হয়নি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
মাত্র তিন-চার মিনিট বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলে সেই সময়ে অক্সিজেন বা নেবুলাইজ়ারের অভাবে শ্বাসকষ্টে একটি শিশু মারা যেতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন অবশ্য উঠছেই। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল বলেন, “জেনারেটর বন্ধ থাকায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পেয়েছি। শুক্রবার জরুরি বৈঠক ডেকেছি। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।”