LOckdown

লকডাউনে বদল, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

ক্রমাগত বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের জেরে এমনিতেই ব্যাঙ্ক পরিষেবার সময় সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৪:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

অগস্টের ২০ থেকে ৩১-এর মধ্যে সব মিলিয়ে ব্যাঙ্ক পরিষেবা মিলবে মাত্র তিন দিন! চলতি মাসে লকডাউন নিয়ে রাজ্য সরকার যে সর্বশেষ সূচি ঘোষণা করেছে তাতেই দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্ক খোলা থাকছে কেবল ২৪, ২৫ এবং ২৬ অগস্ট। এতেই মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ী মহলের।

Advertisement

ক্রমাগত বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের জেরে এমনিতেই ব্যাঙ্ক পরিষেবার সময় সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে পাঁচ দিন, তার মধ্যে গ্রাহকদের লেনেদেনের সময় দৈনিক ১০টা থেকে ২টো— এই চার ঘণ্টা। এ মাসে সাপ্তাহিক লকডাউনের নতুন সূচি অনুসারে ৫ এবং ৮ অগস্টের পর আবার লকডাউন হবে ২০ ও ২১ অগস্ট, বৃহস্পতি ও শুক্রবার। ২২ ও ২৩ শনি ও রবিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ। অর্থাৎ একটানা চার দিন বন্ধ থাকার পরে সোমবার ২৪ অগস্ট ব্যাঙ্ক খুলছে। খোলা থাকছে বুধবার পর্যন্ত। এর পরে ফের বৃহস্পতি আর শুক্রবার লকডাউন, ২৭ ও ২৮ অগস্ট। ২৯ ও ৩০, শনি-রবি ব্যাঙ্ক বন্ধ। সোমবার, ৩১ অগস্ট আবার লকডাউন।

অগস্টের সাপ্তাহিক লকডাউনের সূচি ইতিমধ্যেই তিন বার বদলেছে। এক-এক বার যেই লকডাউনের দিন ঘোষণা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সেই মতো বিভিন্ন কাজকর্মের পরিকল্পনা করছেন। পরক্ষণেই সেই তারিখ বদলে আবার নতুন করে লকডাউনের দিন ঘোষিত হচ্ছে। ফলে পুরনো পরিকল্পনা বাতিল করতে হচ্ছে। এতে পণ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন সব কিছুতেই বিপত্তি হচ্ছে।

Advertisement

নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সভাপতি হরিদাস দে বলেন, “সাপ্তাহিক এই লকডাউন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কতটা কার্যকরী হচ্ছে তা জানি না, কিন্তু ব্যবসায়ীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।’’ তাঁর আক্ষেপ, প্রায় ছ’মাস হতে চলল ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া আর কোনও ব্যবসাই হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সাপ্তাহিক লকডাউনে সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সব ব্যাঙ্কে প্রবেশ এখন নিয়ন্ত্রিত। সকাল ১০টা থেকে ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইন। দুপুর ২টোর পর আর কাজ হচ্ছে না। তার মধ্যেই সাধারণ গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। বেতন আর পেনশন তোলার লম্বা লাইন। হরিদাস বলেন, ‘‘এই অবস্থায় আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।”

নবদ্বীপের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “আমরা বুঝতেই পারছি না কী করা উচিত। লকডাউন জরুরি। কিন্তু তার জন্য পরিকল্পনাও জরুরি। এর চেয়ে একটানা লকডাউন ভাল। কিন্তু লকডাউনের ধাক্কায় একটানা চার-পাঁচ দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যের উপরে বড় প্রভাব পড়বে।”

ঘন-ঘন লকডাউনের দিনবদলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার অসুবিধে হচ্ছে ক্রেতা সঙ্গে বিক্রেতার বা পাইকারের সঙ্গে খুচরো ব্যবসায়ীর, স্থানীয় বাজারের সঙ্গে মোকাম বা উৎপাদকেরও। এতেই ব্যবসায়ী মহল দিশাহারা বলে আক্ষেপ নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম-সম্পাদক তারক দাসের। ওই সংগঠনের আর এক যুগ্ম-সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলেন, “আমাদের আশঙ্কা, আর্থিক লেনদেন লম্বা সময় বন্ধ থাকলে বাজারে পণ্যের জোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে এবং দামও বাড়তে পারে। লকডাউনে কারও আপত্তি নেই। কিন্তু যে ভাবে সেটা করা হচ্ছে, আমরা বিপদে পড়ছি। গত মার্চ মাসের পর থেকে কিন্তু অধিকাংশ মাঝারি এবং ছোট ব্যবসায়ীর হাতে নগদ টাকা নেই। এই ভাবে চললে তাঁরা শেষ হয়ে যাবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement