Jamai Sasthi

জামাই আদরে বাধা, হতাশা

ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। পর পর দু’বছর জামাই-আদর থেকে বঞ্চিত হয়ে কার্যতই যেন মুখভার জামাইদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৫:১৩
Share:

বর্তমানে প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক দিকে করোনা, সঙ্গে প্রশাসনিক কড়াকড়ি, বিধিনিষেধ। পরিস্থিতি আগের মতো থাকলে হয়তো এই বছরেও জমে উঠত জামাইষষ্ঠীর বাজার। আর দুই দিন আগে থেকেই জামাইদের শ্বশুরবাড়ির আসার পর্ব শুরু হত। কিন্তু গত বছরের মতো এ বারও বাস-ট্রেন সব বন্ধ। ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। পর পর দু’বছর জামাই-আদর থেকে বঞ্চিত হয়ে কার্যতই যেন মুখভার জামাইদের।

Advertisement

গত বছর জানুয়ারিতে তেহট্টের অর্পিতা পালের সঙ্গে বিয়ে হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি গ্রামের সুজয় বিশ্বাসের। বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলায় আসা হলেও পরে আর শ্বশুরবাড়ি আসতে পারেননি সুজয়। সুজয় বলেন “বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি অনেকটা দূর। গতবছর যে কারণে যাওয়া হল না, ঠিক একই কারণে এই বছরও ধন্দে রয়েছি।” শাশুড়ি পূর্ণিমা পাল বলছেন, “মেয়ের বিয়ের পর প্রথম বার জামাই এলে বাড়িতে নানা আনন্দ হয়। কিন্তু গত বছরের পাশাপাশি এ বছরও জামাই-আদর করা যাবে না। যে কারণে দূর থেকেই ফোনে কথা বলেই দিনটি উপভোগ করতে হবে। তা ছাড়া আর তো কোনও উপায় নেই।”

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তেহট্টের ঝুমা সাহার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় বহরমপুরের পার্থ বিশ্বাস। গত বছরই নানা ভাবে শ্বশুরবাড়ি আসার চেষ্টা করলেও শেষমেষ পরিবারকে বিপদে না ফেলতেই জামাইষষ্ঠীতে আসা হয়নি পার্থের। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই বছরও বাড়িতে থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ফোনে যোগাযোগ করলে পার্থ বলেন, “বাইরে থেকে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ফালতু বিপদের মধ্যে ফেলা উচিত হবে না। কে, কী ভাবে সংক্রমিত তা বলা কঠিন। তাই এ বছরও আপাতত ফোনে যোগাযোগ করে স্ত্রী ষষ্ঠী পালন করবেন।”

Advertisement

আর তেহট্ট থেকে মিতা সাহা বলেন “জামাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ওরা আসতে পারত। কিন্তু জামাই আদর করা হল না।”

রাজ্য প্রশাসনের বিধিনিষেধে বন্ধ যাবতীয় লোকাল ট্রেন, বাস, অটো। যার জেরে জামাইষষ্ঠীর যাবতীয় পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে গিয়েছে কালীগঞ্জের বড়কুলবেড়িয়ার দক্ষিণ পাড়ার সদ্য বিবাহিত শুভঙ্কর সিংহরায়ের। তাঁর আক্ষেপ, গত ছ’মাস আগেই বিয়ে হয়েছে। এবছরই তাঁর প্রথম জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা এলাকায়। যা তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত। ফলে, জামাইষষ্ঠীর আদর-যত্ন মিস হয়ে গেল।

আবার, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কালীগঞ্জের মেয়ের বিয়ে হয় মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ এলাকায়। এ বছর তাঁদের দ্বিতীয় ষষ্ঠী। তবে প্রমিতা পাল চৌধুরী ও হিমাদ্রী শেখর চৌধুরীর আক্ষেপ— ‘‘বিয়ে দুই বছর হতে চললেও জামাইষষ্ঠীর আদরের গল্পই শুনে গেলাম। আদর আর বুঝলাম না।’’ পর পর দুই বছর করোনা সংক্রমণ জামাইষষ্ঠীর আদরেও যে কোপ বসিয়েছে, সন্দেহ নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement