প্রতীকী ছবি।
বিয়ের আসরেই মাতাল বরকে হাতাহাতি করতে দেখে পিঁড়ি ছেড়ে উঠে গেলেন পাত্রী শিল্পা সিংহ। শিল্পার বক্তব্য, ‘‘বিয়ের দিনও যে নিজেকে সামলে রাখতে পারে না, তার সঙ্গে সারা জীবন বাস করা সম্ভব নয়।’’ বিয়ে ভেস্তে গেল। শেষ পর্যন্ত বিয়ের জন্য শিল্পার পরিবারের প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। তার মধ্যে দেড় লক্ষ টাকা বরপক্ষকে দিতে হবে বলে গ্রামবাসীরাই স্থির করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ছিল বিয়ের দিন। সন্ধ্যায় বরযাত্রীদের নিয়ে বর চলে আসেন জঙ্গিপুরের মিঞাপুর থেকে। পাত্রীর বাড়ি ধুলিয়ানের লালপুরে। সেখানে খাওয়া দাওয়া অতিথি আপ্যায়ন ভাল ভাবে হলেও গোলমাল শুরু হয় পুরোহিতকে কেন্দ্র করে। সন্ধেবেলা সম্প্রদানের সময় পুরোহিত দাবি করেন, তাঁকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু বরপক্ষের দাবি ছিল, তিনশো টাকা দেওয়া হবে। তাই নিয়ে শুরু হয় বচসা। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। সেই সময়ই বর মন্মথ দাস মদ্যপ অবস্থায় নিজেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। মন্মথ মদ খেয়ে বিয়ে করতে এসেছেন দেখে গোড়া থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন শিল্পা। এ বার মন্মথ হাতাহাতি করছেন দেখে শিল্পার ক্ষোভ বাড়ে। এোই সময় মন্মথ শিল্পার বাবার গায়েও হাত তোলেন বলে অভিযোগ। তা দেখে শিল্পা জানিয়ে দেন, এই বিয়ে তিনি করবেন না। কারও কথায়ই তিনি আর শুনতে চাননি। বিয়ে তখনই ভেস্তে যায়। শিল্পার কথায়, ‘‘বিয়ে করতে এসেছে মদ খেয়ে। হাতহাতি করছে বিয়ের আসরে। এমন লোককে বিয়ে করার চেয়ে সারা জীবন অবিবাহিত থাকব, তা-ও ভাল।’’
শিল্পা সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বিড়ি বেঁধে কিছু রোজগার করেন।
বিয়ে ভেস্তে যাওয়ার পরে ওঠে টাকাপয়সা খরতের প্রশ্ন। শিল্পার বাবা কাঠের মিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি মেয়ের বিয়েতে কিছু টাকা নগদ দিয়েছেন বলে দাবি। তা ছাড়া, গয়না ও বিছানাপত্রও দেওয়া হয়েছে। তাতে প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ হয় পাত্রী পক্ষের। উভয় পরিবারের লোকজন ও গ্রামের মানুষেরা আলোচনা করে সেই রাতেই পাত্রপক্ষকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দু’ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে জানান। পাত্রপক্ষ দরাদরি শুরু করে। মঙ্গলবার রাতে শেষ পর্যন্ত টাকার অঙ্ক দেড় লক্ষে নামে। তার পরে ছাড়া পেয়েছে পাত্রপক্ষ। পাত্র মন্মথর কথায়, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। কেন এত টাকা নেওয়া হল কে জানে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিয়ের রাতে কাকে নেশার ঘোরে কী বলেছি, তা কী ধরতে আছে?’’