প্রতীকী ছবি।
ভোটের আগে মতুয়া-মন পাওয়ার জন্য লড়াই তীব্র হচ্ছে তৃণমূল, বিজেপির মধ্যে।
দিন কয়েক আগেই বনগাঁয় এসে মতুয়াদের জন্য একাধিক ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পাশের জেলা নদিয়ার মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় তাঁর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। আবার তৃণমূলের দাবি, মতুয়ারা তাঁদের দিকেই ঝুঁকছেন।
নদিয়ার দক্ষিণপ্রান্তের একাধিক বিধানসভা এলাকা মতুয়া-প্রধান। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রর একটা বড় অংশে বিপুল সংখ্যায় মতুয়ারা বসবাস করেন। কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, রানাঘাট দক্ষিণের মতো অঞ্চলে প্রচুর মতুয়ার বাস। এই এলাকাগুলিতে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের আধিপত্য ছিল। তবে গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার মতুয়া-প্রধান এলাকাগুলিতে তৃণমূলকে ধাক্কা খেতে হয়েছে। দুই লোকসভা বনগাঁ এবং রানাঘাট গত ভোটেই হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। মতুয়া এলাকায় এখন নিজেদের হারানো জমি ফিরে পাওয়া যেমন রাজ্যের শাসকদলের কাছে চ্যালেঞ্জ, তেমনই এই এলাকায় নিজেদের জমি আরও শক্ত করতে মরিয়া পদ্ম শিবির।
দিন কয়েক আগেই বনগাঁয় ঘুরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিন মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিকে তিনি সরকারি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করেন। মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষণা আগেই হয়েছিল। পাঠ্যসূচীতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী অন্তর্ভুক্তির কথাও তিনি জানিয়েছেন। হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, এখানে এনআরসি হবে না বলেও জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর ২৪ পরগনার এই সভায় যথেষ্ট ভিড়ও হয়।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর যাবতীয় ঘোষণা ও তাঁর সভায় ভিড়ের প্রভাব নদিয়ার দক্ষিণে মতুয়া-ভোটের উপর মধ্যে পড়বে না বলেই দাবি করছেন বিজেপি-পন্থী মতুয়া সংগঠনের নেতারা। বিজেপি-ঘেঁষা মতুয়া সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মুকুটমনি অধিকারী বলেন, “ছুটি এবং সিলেবাসে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের কথা অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তবে তাতে আগে সরকারি শিলমোহর পড়ুক। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা অনেক দিন ধরে চলছে কিন্তু এখনও একটি ইটও গাঁথা হয়নি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের স্থায়িত্বের কথা বলছেন না। তাঁদের নাগরিকত্বের কথা বলছেন না। নানা সরকারি কাজে ১৯৭১ সালের নথি চাইছে এই সরকার। এতে মতুয়া-মন জয় করা যাবে না।
তৃণমূল-পন্থী মতুয়া সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রমথরঞ্জন বোস আবার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় মতুয়ারা খুশি। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই থাকবেন। আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই। বিজেপি সরকার মতুয়াদের জন্য কিছু করেনি। তাঁদের প্রতি মতুয়াদের আস্থা চলে গিয়েছে।”