বছর পেরিয়ে বোর্ড দখলে পেল বিজেপি 

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নির্বিঘ্নে সারতে প্রায় ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত অফিসের দুই দিকে প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি ছিল ১৪৪ ধারা।

Advertisement

সাগর হালদার ও কল্লোল প্রামাণিক

করিমপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

নব নির্বািচত প্রধান (গলায় উত্তরীয়) ও উপপ্রধান। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পরে ১৫ মাস কেৈটে গেলেও বোর্ড গঠন হয়নি করিমপুর ২ পঞ্চায়েতে। অনেক টালবাহানার পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার তা হল। সংখ্যাধিক্যের জোরে বিজেপির দখলে গেল পঞ্চায়েত। প্রধান হলেন তাদেরই মনীষা মালাকার, উপপ্রধান হলেন সোমা সাহা ভট্টাচার্য। করিমপুর ১-এর বিডিও অনুপম চক্রবর্তী জানান, প্রকাশ্য ভোটাভুটিতে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।

Advertisement

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নির্বিঘ্নে সারতে প্রায় ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত অফিসের দুই দিকে প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি ছিল ১৪৪ ধারা। গোটা সময়টা হাজির ছিলেন তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) অর্ণব বিশ্বাস, এসডিপিও (তেহট্ট) অর্ক বন্দোপাধ্যায় এবং বিডিও। দুপুর ১১টা নাগাদ তোড়জোড় শুরু হয়, গোটা প্রক্রিয়া শেষ বেলা ৩টে বেজে যায়।

করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ২২টি আসনের মধ্যে ১২টিতে জিতেছিল বিজেপি। আটটি পায় তৃণমূল, বাকি দু’টি নির্দল। পরে দুই নির্দল প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে সমীকরণ হয় ১২-১০। এ দিন প্রধান পদের নির্বাচনে বিজেপির মনীষা মালাকার তৃণমূলের অনুভা পালকে ১১-১০ ভোটে পরাজিত করেন এবং উপপ্রধান পদে বিজেপির সোমা সাহা ভট্টাচার্য ১২-১০ ভোটে তৃণমূলের তাপসী সিংহ রায়কে পরাজিত করেন। বিজেপির এক সদস্য ভুল ভোট দেওয়ার কারণে প্রধান পদে একটি ভোট কম পান মনীষা মালাকার।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরনোর পরে জেলার প্রায় সর্বত্র বোর্ড গঠন হয়ে গেলেও করিমপুর ২-এ তা আটকে যায়। বিজেপি তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে থাকায় এলাকায় উত্তেজনা ছিল। বড় গোলমালের আশঙ্কা থাকায় বোর্ড গঠন স্থগিত রাখে প্রশাসন। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বোর্ড গঠন করতে না পেরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। শেষে আদালতের নির্দেশেই অগস্টের শুরুর দিকে বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি শুরু হয়।

বিজেপির অভিযোগ, তাদের ১২ জন সদস্যকে ভাঙানোর জন্যই তৃণমূল সময় নষ্ট করছিল। চাপের মুখে সব জয়ী বিজেপি সদস্য মায়াপুরে গিয়ে মাস দুয়েক আত্মগোপন করেন। মনীষা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যে ভাবেই হোক বোর্ড গঠন করবই। অনেক ঝড় এসেছে, বাধা-বিঘ্ন এসেছে, পরিবার-পরিজন দু’মাস বাইরে কাটিয়েছি। তৃণমূলের চক্রান্তের কারণেই বোর্ড গঠন হতে এত দেরিতে হল। এলাকার মানুষ এত দিন পরিষেবা পেলেন না।’’

করিমপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ সাহা অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, ‘‘বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই বোর্ড গঠন করতে এত দেরি হল। অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানোর সময় নিতেই বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। এখন উল্টে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’ করিমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমানে সাংসদ তথা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement