বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে সুতপা ফোন সুশান্তর! —ফাইল চিত্র।
কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরী খুনে নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসছে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে জেরা করে। পুলিশের কাছে সুতপার বাবা দাবি করেছিলেন, সুশান্তকে এড়িয়ে যেতে বার বার ফোন নম্বর বদল করেছিলেন তাঁর মেয়ে। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, নিজের পুরনো সিমকার্ডও বাতিল করে দেন তিনি। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। পুলিশের দাবি, সুতপা নম্বর বদল করলেও সুশান্ত তার ‘সোর্স’ মারফত প্রতি বারই নম্বরের খোঁজ পেয়ে যেত। সুতপার এক বান্ধবীকেই ‘সোর্স’ হিসাবে ব্যবহার করত সে। তদন্তকারীদের মতে, প্রযুক্তিবিদ্যায় যথেষ্ট দখল ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সুশান্তের। তাই সুতপার ফোন নম্বর হাতে পেয়ে নিজের পরিচয় লুকিয়ে তাঁকে একটি বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করে নিয়মিত ফোন করত সুশান্ত।
কী সফটঅয়্যার ব্যবহার করে সুশান্ত সুতপাকে ফোন করত, সে সম্পর্কে জানতে তাকে আরও জেরা করছেন তদন্তকারীরা। তবে সুতপার বন্ধুদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে মাঝে তিনি তাঁদের কাছে অভিযোগ করতেন যে, বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। কখনও পাকিস্তান, কখনও বাংলাদেশ বা কখনও ফিনল্যান্ডের কান্ট্রি কোড ভেসে ওঠে মূল নম্বরের আগে। সেই ফোন রিসিভ করতেই যে সুশান্তর কণ্ঠস্বর ভেসে আসত সে কথাও সুতপা জানিয়েছিলেন বন্ধুদের কাছে। আর তার পরেই তিনি নম্বর বদল করে ফেলেন। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সফটঅয়্যারের এমনই কেরামতি যে সুতপার ফোনে সুশান্তর কণ্ঠস্বরের কোনও রেকর্ড রাখাও যায়নি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এমন সফটঅয়্যারের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন। এথিকাল হ্যাকার শিবা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সুশান্ত চৌধুরী কী ধরনের সফটঅয়্যার ব্যবহার করত সে সম্পর্কিত তথ্য জানা নেই। তবে রেডমির্চ-এর মতো কিছু সফটঅয়্যার ব্যবহার করে কাউকে নাম-পরিচয় গোপন রেখে ফোন করা যায়। এমনকি কোন দেশ থেকে ফোন আসছে তা-ও অনুমান করা যায় না। বড় ধরনের অপরাধমূলক কাজ করতে অনেক সময় এই ধরনের সফটঅয়্যার ব্যবহার করা হয়।’’
তদন্তকারীদের মত, প্রযুক্তিবিদ্যায় পারদর্শী সুশান্ত তার ‘জ্ঞান’ কাজে লাগিয়ে বার বার সুতপার কণ্ঠস্বর শুনতে চেয়েছে। কিন্তু তাতে সে ব্যর্থ হয়। কারণ ঘন ঘন নম্বর বদলে ফেলতেন সুতপা।