নিয়ন্ত্রকের দাবি, প্রবীণদের কিছু বিমা প্রকল্পে চড়া হারে প্রিমিয়াম বাড়ানো হচ্ছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম বছরে ১০ শতাংশের বেশি বাড়াতে পারবে না বিমা সংস্থাগুলি। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ জারি করল নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিটি সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠেছে, বছরে প্রিমিয়াম বৃদ্ধির হার বাঁধা হল কেন? প্রতি বছর তো তা বাড়ানোর কথা নয় সংস্থাগুলির। এতে বছর বছর ১০% পর্যন্ত প্রিমিয়াম বৃদ্ধির পথ খুলে গেল বলেও আশঙ্কা একাংশের।
নিয়ন্ত্রকের দাবি, প্রবীণদের কিছু বিমা প্রকল্পে চড়া হারে প্রিমিয়াম বাড়ানো হচ্ছে। তাঁদের সীমিত আয়ের কথা বিবেচনা করে তাতে রাশ টানতেই এই নির্দেশ। যদিও অনেকের বক্তব্য, বাস্তবে এই নির্দেশের ফলে প্রতি বছর ১০% হারে স্বাস্থ্য বিমার খরচ বাড়ানোর অধিকার পেয়ে গেল সংস্থাগুলি। তাঁদের প্রশ্ন, ১০% অনেক বেশি, প্রবীণ নাগরিকদের আয় কি প্রতি বছর এই হারে বাড়ে? এমনকি মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য তো অনেক কম।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ‘‘সংস্থাগুলি সাধারণত প্রবীণদের প্রিমিয়ামই সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ায়। যুক্তি দেয়, বয়স্ক মানুষেরা বেশি অসুস্থ হন। ফলে তাঁদের চিকিৎসায় খরচ হয় বেশি। তাই বিমার প্রয়োজনও বেশি পড়ে। সেই কারণেই প্রিমিয়াম বেশি। বাড়ানোও হয় বেশি হারে।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই নির্দেশের জেরে প্রিমিয়াম উল্টে বেশি চড়ে গেলে অনেক প্রবীণ নাগরিকের পক্ষেই তা চালানো কঠিন হতে পারে। আইআরডিএ-র অবশ্য দাবি, তাঁদের বোঝা কমানোই উদ্দেশ্য।
নিয়ন্ত্রক এটাও জানিয়েছে, এই প্রিমিয়াম কখনও ১০ শতাংশের বেশি বাড়াতে হলে আইআরডিএ-র সঙ্গে আলোচনা করতে হবে বিমা সংস্থাকে। নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা না বলে তাঁদের কোনও প্রকল্প বাজার থেকে তুলেও নেওয়া যাবে না। জীবন বিমা নিগমের বিপণন বিভাগের প্রাক্তন কর্তা অরূপ দাশগুপ্ত বলেন, “প্রতি বছর ১০% হারে প্রিমিয়াম বাড়ানো হলে প্রবীণ নাগরিকদের উপর আর্থিক বোঝা বাড়বে। গ্রাহকের বয়স কিছু গণ্ডি পেরোলে প্রিমিয়াম বাড়ে। কিন্তু নির্দিষ্ট বয়স বন্ধনীর মধ্যে তা একই থাকে। তবে ওই সময়ের মধ্যে গ্রাহক যদি চিকিৎসার জন্য বিমার টাকা দাবি করেন, সে ক্ষেত্রেও প্রিমিয়াম বাড়ানো হয়। প্রতি বছর নয়, শুধুমাত্র প্রিমিয়াম বৃদ্ধির সময় তা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে বাঁধা যেতে পারে।’’