শান্তিপুর নিকাশি নালার জল উপচে রাস্তায়। ছবি প্রণব
নিকাশি নিয়ে শান্তিপুরের মাথাব্যথা অনেক দিনের। পুরভোটের আগে বিরোধীরা ফের সেই অস্ত্রে শান দিচ্ছে। আবার সম্প্রতি অম্রুত প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নিকাশি ঢেলে সাজার প্রাথমিক কাজ শুরুর কথা সামনে আনছে শাসক দল।
প্রাচীন এই শহরে বৃষ্টি হলেই বেশ কিছু জায়গায় জল জমে যায়। নালার জল উপচে আসে রাস্তায়, কখনও বা বাড়ির ভিতরেও। বৃষ্টির ছাড়াও অন্য সময়ে নালার জল উঠে আসে রাস্তায়। কোথাও বা পাড়ার ছোট নালা উচ্চতায় কম হওয়ায় জল হাইড্রেনে গিয়ে
পড়ে না।
খুদে কালীতলায় সমস্যা সব থেকে বেশি। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজপুত পাড়া লেন, তোপখানা পাড়া, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাঙালি ওস্তাগর লেনেও সমস্যার শেষ নেই। আগমেশ্বরীতলা থেকে সর্বনন্দীপাড়ার দিকে যাওয়ার রাস্তা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌগাছাপাড়া, ১ নম্বর ওয়ার্ডের হরেকৃষ্ণ কলোনি— চিত্র একই।
শহরবাসীর অভিযোগ, অনেক জায়গায় পরিকল্পনা মাফিক নালা তৈরি হয়নি। অনেক জায়গায় নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। শান্তিপুরের প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর তথা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বামপ্রার্থী সৌমেন মাহাতোর মতে, “নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হননি, যার ফল ভুগতে হচ্ছে।”
প্রাক্তন পুরকর্তাদের দাবি, প্রাচীন এই জনপদে আগের চেয়ে জনবসতি বেড়েছে। তাই অনেক জায়গায় নালা তৈরিতে সমস্যা রয়েছে। যে জলাশয়ে নিকাশির জল পড়ে, তা-ও পর্যাপ্ত নয়। অম্রুত প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে শহরে একাধিক হাইড্রেন তৈরি হবে। খুদে কালীতলা, নবীনপল্লি, দাদ্দেপাড়া, ২ নম্বর রেলগেট, বৌবাজার, বড়বাজার মুন্সিপাড়া, গোভাগাড় মোড়, কুটিরপাড়ার মতো নানা জায়গায় হাইড্রেন তৈরি হবে। অনেক জায়গায় কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা দিয়ে এই হাইড্রেন যাবে। এতে নিকাশি সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব হবে। নবীনপল্লি এলাকায় আগেই জমি কেনা ছিল পুরসভার। সেখানে একটি বুস্টিং পাম্প বসানো হবে।
পুরভোটের বাজারে নিকাশির জল শাসক দলকে কতটা বেগ দেবে সেই প্রশ্ন যেমন ঘুরপাক খাচ্ছে, অম্রুত প্রকল্প ক্ষতে কতটা মলম লাগায়, ব্যালট বাক্সেই তার পরীক্ষা হবে।