করিমপুরের উপনির্বাচনে নিরাপত্তাই বড় চ্যালেঞ্জ

ভোট নির্বিঘ্ন করতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে নানা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। করিমপুরে নতুন তৈরি ডিসিআরসি-তে (‌ভোটসামগ্রী বিতরণ কেন্দ্র) বৃহস্পতিবার বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (ইভিএম) আনা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

যে কোনও নির্বাচনেই সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করানো প্রশাসনের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। উপ-নির্বাচনের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি, কেননা সে দিন অন্য কোথাও ভোট না-থাকায় বাইরের এলাকা থেকে লোক ঢুকে গোলমাল পাকানোর আশঙ্কা বাড়ে। করিমপুর কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছে না কোনও পক্ষই, বিশেষ করে রাজ্যের শাসক দলেরল বিরোধীরা।

Advertisement

ভোট নির্বিঘ্ন করতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে নানা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। করিমপুরে নতুন তৈরি ডিসিআরসি-তে (‌ভোটসামগ্রী বিতরণ কেন্দ্র) বৃহস্পতিবার বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (ইভিএম) আনা হয়েছে। শুক্রবার ভোটকর্মীরা সেগুলি পরীক্ষা করেন। করিমপুরে এসে কাজ তদারকি করেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল এবং কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই। ছিলেন রিটার্নিং অফিসার তথা তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ গুপ্তও।

করিমপুর, থানারপাড়া, মুরুটিয়া ও হোগলবেড়িয়া— এই চারটি থানা এলাকার মোট ১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র। যার মধ্যে করিমপুর ১ ব্লকের আটটি ও করিমপুর ২ ব্লকের ছটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কিছু জায়গায় সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা ফের যাতে না ঘটে, তার জন্য কয়েক দিন আগেই এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে আধাসেনা। তারা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ‘রুট মার্চ’ করছে। এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সেনপাড়া ও নতিডাঙা মোড়ে পথচলতি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। কিছু বাড়িতে গিয়েও কথা বলেন তাঁরা। ভোট নিয়ে কেউ কাউকে ভয় দেখাচ্ছে বা জোর করছে কি না তা-ও জানতে চান। ভোটের সময়ে যাতে বাইরে থেকে লোক ঢুকতে না পারে তার জন্য পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে বলে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই কেন্দ্রের বহু বুথে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। এ বার যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়, তার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ একই অভিযোগ করে ডিওয়াইএফ-এর জেলা সভাপতি নাদির হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেখানে অশান্তি হয়েছিল, সেই সব জায়গা চিহ্নিত করে পুলিশ রুট মার্চ করুক। সবাই যাতে নির্ভয়ে নিজের ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা হোক।’’ করিমপুর ১ তৃণমূল ব্লক সভাপতি তরুণ সাহা বলেন, “আমরাও চাই, অবাধ ও সুস্থ পরিবেশে ভোট হোক।”

করিমপুর কেন্দ্র

• বুথ: ২৬১টি

• এক কেন্দ্রে তিন বুথ: ৫টি

• এক কেন্দ্রে দুই বুথ: ৩৬টি

• ভোটার: ২৪০৭৬৯

• পুরুষ: ১২৪১২৪

• মহিলা: ১১৬৬৪১

• তৃতীয় লিঙ্গ: ৪

• কেন্দ্রীয় বাহিনী: পাঁচ কোম্পানি (এখনও পর্যন্ত)

জেলাশাসক বিভু গোয়েল জানান, ইতিমধ্যেই চার থানা এলাকায় মোট পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে গিয়েছে। নির্বাচনের আগেই বাকি বাহিনী চলে আসবে। ভোটের দিন বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এছাড়াও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পাশের থানাগুলিকেও সতর্ক থাকতে কথা বলা হয়েছে। নাকা চেকিং চলছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা এলাকায় মোট বুথের সংখ্যা ২৬১টি। তার মধ্যে তিনটি বুথের ভোট কেন্দ্র ৫ টি, দুই বুথের কেন্দ্র ৩৬টি ও বাকি কেন্দ্রে একটি করে বুথ রয়েছে। এবারে করিমপুর বিধান সভায় চারজন প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। মোট ভোটার ২৪০৭৬৯, তার মধ্যে পুরুষ ১২৪১২৪, মহিলা ১১৬৬৪১, তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement