গেদে হয়ে নিজের দেশে ফিরলেন আমফান শেখ। — নিজস্ব চিত্র।
রং নম্বরে মিস্ড কল থেকে প্রেম। প্রেমিকার আবদার মেটাতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বছর তিনেক আগে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিল ভারতীয় যুবক। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হতে হয় তাঁকে। এর পর অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই যুবকের তিন বছর কাটে বাংলাদেশের জেলে। সেই সময় অনেক চেষ্টা করেও সাড়া দেননি প্রেমিকা। তিন বছর পর গত ২৫ মে অবশেষে ভারত-বাংলাদেশ হাইকমিশন পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে গেদে-দর্শনা চেকপোস্ট হয়ে ভারতে ফিরলেন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির যুবক আমফান শেখ।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, জলঙ্গির সরকারপাড়ার বাসিন্দা আমফান। মোবাইল রিচার্জের দোকান চালাতেন। সমাজমাধ্যমের সূত্রে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের মহিষকুণ্ডির এক তরুণীর। সময়টা ২০২০ সালের জুন মাস। সেই পরিচয় থেকে তৈরি হয় দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক। মাস তিনেক প্রেমপর্বের পর আমফানকে বাংলাদেশে যেতে জোরাজুরি করতে থাকেন তরুণী। প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর সীমান্ত পেরিয়ে কুষ্টিয়া যান আমফান। কিন্তু প্রেমে বিধি বাম। চার বাংলাদেশি আমফানকে আটক করে তুলে দেয় বিজিবির হাতে। বিজিবি আমফানকে গ্রেফতার করে। অনুপ্রবেশের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আমফানকে তিন বছরের জন্য কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
তিন বছর কারাদণ্ড ভোগের পর মুক্তি পান আমফান। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের গেদেয় প্রবেশ করেন তিনি। আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ আমফানকে তাঁর বাবা ইসমাইল শেখের হাতে তুলে দেয়। তিন বছর বাদে দেশের মাটিতে পা রেখে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে আমফান। কান্নায় বুজে আসা গলায় আমফানের বক্তব্য, ‘‘বন্দিদশায় জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বার বার প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে স্বীকার করেনি যে, আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তা হলে হয়তো আমার সাজা কিছুটা কম হত। এ ভাবে ভালবাসার মূল্য দিতে হবে তা কখনও ভাবিনি।’’