এখানেই পুকুর হওয়ার কথা ছিল বলে দাবি বিজেপির। —নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে খাতায়কলমে পুকুর তৈরি করা হয়েছে। তার টাকাও উঠে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই পুকুরের অস্তিত্ব নেই। নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বিলকুমারী পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ করেছেন ওই পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যরা। যদিও তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের কর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
বিজেপি-র অভিযোগ, মাস্টার রোলে লেখা হয়েছে পুকুরটি ৬৮ ফুট লম্বা, ৩২ ফুট চওড়া এবং নয় ফুট গভীর। কিন্তু বাস্তবে সেই পুকুর নেই। এ নিয়ে তারা অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিলকুমারী পঞ্চায়েতের প্রধান অর্পিতা বর্মণের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, অর্পিতা তাঁর স্বামী, শাশুড়ি এবং পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যের নাম ১০০ দিনের কর্মী তালিকায় নথিবদ্ধ করে কোনও কাজ না করেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আরও অভিযোগ, কালিবাস, উত্তর বহিরগাছির একাধিক এলাকায় এ ভাবেই মাস্টার রোল তৈরি হয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়ে গিয়েছে। অথচ কাজে হাত দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ওই পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য কাকলি মণ্ডল বিডিওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কাকলির বক্তব্য, ‘‘শুধু বিজেপি সদস্যরাই নন, তৃণমূলেরও কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য আমার সঙ্গে এ বিষয়ে একমত। তবে শাসকদলের সদস্য হওয়ায় তাঁরা অনেকেই প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। সরকারি গৃহ আবাস যোজনায় এলাকার প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত রেখে অর্থের বিনিময়ে দলীয় কর্মী-সমর্থক এমনকি পরিবারের লোকজনকেও একাধিক বাড়ি পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পঞ্চায়েতেরই এক তৃণমূল সদস্যের কথায়, ‘‘গত ২০১৮ সাল থেকে এই ধরনের কার্যকলাপ চলছে। কখনও আমাদের ভুল বুঝিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে। কখনও আমাদের সই নকলও করা হয়েছে। আমরা এ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম প্রধান অর্পিতা বর্মণের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যা বলার পঞ্চায়েতে গিয়েই বলব।’ অথচ একাধিক বার যোগাযোগ করেও পঞ্চায়েতে তাঁকে পাওয়া যায়নি।’’
অর্পিতা অবশ্য বলেন, ‘‘যে অভিযোগ এসেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তার পর মন্তব্য করব।’’
স্থানীয় তৃণমূল নেতা গুরুপদ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘দল করতে গেলে এ ধরনের ঘটনা একটু-আধটু হয়েই থাকে। যাঁরা টাকার ভাগ পাননি তাঁরাই এই অভিযোগ করছেন।’’