তৃণমূল নেতা বাসির মোল্লা। — ফাইল চিত্র।
শনিবার দিনভর চর্চার পরে রবিবারও তৃণমূল নেতা বাসির মোল্লা রইল আলোচনার কেন্দ্রে। বিশেষ করে তাকে পুলিশের খাতির যত্ন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।
রবিবার বহরমপুরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক অর্ঘ্য আচার্যের এজলাসে তোলা হয়েছিল ডোমকল থেকে অস্ত্র আইনে ধৃত তৃণমূল নেতা বাসির মোল্লাকে। এ দিন সেখানে বাসিরের আইনজীবী আরিফুজ্জামান জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা না মঞ্জুর করেন। তিনি বাসিরকে এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী আরিফুজ্জামান বলেন, ‘‘এ দিন আমি জামিনের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু বিচারক সব দিক বিবেচনা করে জামিন নাকচ করে এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ফের আজ সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে।’’
এ দিন সরকার পক্ষের আইনজীবী বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছি। বিচারক সব দিক দেখে জামিন নাকচ করে সোমবার ফের তাঁকে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন।’’ পুলিশ হেফাজতে চাইলেন না কেন? বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে হেফাজতে চেয়ে আবেদন আমার কাছে আসেনি। তাই আমিও আবেদন করিনি।’’ পুলিশের দাবি, রবিবার হওয়ার কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। অন্যদিকে এক সঙ্গে ১৭ জন আসামিকে নিয়ে যেতে গিয়ে তদন্তকারী অফিসারের পৌঁছতে কিছুটা দেরি হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। সোমবার আদালতের কাছে বাসির মোল্লাকে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
ডোমকলের ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন অধীর। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শাসক দলের কিছু দুষ্কৃতী ডোমকলে সন্ত্রাস শুরু করেছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এমন পক্ষপাতিত্ত্ব করা হলে এবং পুলিশের এমন ভূমিকা থাকলে তা নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করবে এবং পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকেও ব্যাহত করবে।
রবিবার দুপুরে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে বাসির মোল্লার গ্রেফতারের প্রসঙ্গে অধীর বলেন, ‘‘আমাদের কিছু না করেই খুনের মামলার আসামি করে দিয়েছে। আর যে রিভলভার নিয়ে খুন করতে গিয়েছে, তাকে রাতে পুলিশ অফিসারেরা বসে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। রাতের ভোজনে তার যাতে অসুবিধা না হয় মাছ, মাংস, মিঠাইয়ের ব্যবস্থা করেছে। তৃণমূলের নেতাকে গ্রেফতার করেছে ভুল করে। তাই সেই জায়গায় ক্ষতিপূরণ মেটাতে গিয়ে, তাদের খুশি করতে চাকরি বাঁচাতে কংগ্রেসের নেতা কর্মীর উপরে খুনের মামলা করা হল।’’ তবে তৃণমূল নেতৃত্ব ও পুলিশ সে দাবি অস্বীকার করেছেন।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ কলকাতায় ডোমকল প্রসঙ্গে এ দিন বলেন, ‘‘আমি ওখানে কয়েক বছর আগে পুরভোটে গিয়েছিলাম প্রচার করতে। প্রচার হল, কিন্তু ভোট কাউকে করতে দিল না। আইনশৃঙ্খলা নেই ওখানে। গায়ের জোর চলে।’’ এই দাবিও তৃণমূল অস্বীকার করেছে।