প্রতারণায় দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার গোকুলচন্দ্র বিশ্বাসকে বুধবার রানাঘাট আদালতে তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র sudevdas123@gmail.com
ক্ষুদ্র ঋণের জন্য মোবাইল অ্যাপ হয়তো কেউ ডাউনলোড করলেন। কিন্তু তার পরই তাঁর মোবাইলের যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিলেন প্রতারকেরা। পরে টাকা চেয়ে চলল ‘ব্ল্যাকমেল’ করা। দেশজুড়ে সক্রিয় হয়েছে এমন প্রতারণার চক্র।
সম্প্রতি এমনই বেশ কিছু অভিযোগ দায়ের হয় দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলে। বুধবার সকালে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে হাঁসখালির এক বাসিন্দা। অভিযুক্তির নাম গোকুলচন্দ্র বিশ্বাস। এ দিন তাকে রানাঘাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাঁসখালি বাসিন্দা অঙ্কন বিশ্বাস ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার নামে একটি সংস্থা খুলেছিল। সংস্থার মোবাইল অ্যাপ সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই ওই অ্যাপ ডাউনলোড করে ঋণ নিয়েছেন এবং তা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোডের সময় গ্রাহকদের মোবাইলে থাকা যাবতীয় তথ্য ও ছবি হাতিয়ে নিত ওই সংস্থা। পরে সেই সমস্ত ছবি ‘সুপার ইম্পোজ’ করে পাঠানো হতো ঋণ নেওয়া গ্রাহকদের কাছে। তার পর চলত টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেল করা।
সম্প্রতি দিল্লির বাসিন্দা জয় গোয়েল নামে এক ব্যক্তি ওই অ্যাপ ডাউনলোড করে গত গত ২৫ এপ্রিল ১৯ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। পরে তিনি সেই ঋণ পরিশোধ করেন। তার পরই তাঁকে প্রতারণা করা শুরু হয়। তিনি দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এই প্রতারণা চক্রের মূল চক্র হিসেবে হাঁসখালির গোবিন্দপুরের বাসিন্দা অঙ্কন বিশ্বাসের খোঁজ পায় পুলিশ।
অঙ্কন তাঁর বাবা গোকুল চন্দ্রকে সংস্থার ডিরেক্টর পদে রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই এক দিনে ওই সংস্থার সাত কোটি টাকার লেনদেনেরও হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। গত মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের চার সদস্যের একটি দল হাঁসখালিতে আসেন।
তদন্তকারি এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘দেশের ছ’টি রাজ্যে এ ধরনের প্রতারণা চক্র সক্রিয় রয়েছে। গত এপ্রিল মাসে গুজরাতের কচ্ছ থেকেও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই মূল চক্রি হিসেবে অঙ্কন বিশ্বাসের খোঁজ মিলেছে। অঙ্কন পলাতক। তার বাবাকে গ্রেফতার করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাকে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।"
অভিযুক্তের আইনজীবী তন্ময় দে বলেন, ‘‘আমার মক্কেলের ছেলে একটি কনসালটেনসি সংস্থা রয়েছে। ওই সংস্থার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে প্রতারকেরা। যে কারণে আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।’’