প্রতীকী ছবি
ছাগলের খাবারের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন এক প্রৌঢ়া। তার ঘণ্টা তিনেক পরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল প্রকল্পের ভিতর থেকে তাঁর অর্ধনগ্ন দেহ মিলল। রবিবার বিকেলে শক্তিপুরের কাজিপাড়ার ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, বছর পঞ্চান্নের ওই প্রৌঢ়াকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। খবর পেয়ে শক্তিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান। পরে তাঁরা ঘণ্টা দুয়েক বহরমপুর-রামনগর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও। তবে শক্তিপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এ দিন রাতে ওই প্রৌঢ়ার ছেলে শক্তিপুর থানায় লিখিত ভাবে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজিপাড়ার ওই জলপ্রকল্প থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে প্রৌঢ়ার বাড়ি। বছর দশেক আগে তাঁর স্বামী মারা যান। তাঁর ছয় মেয়ে এবং তিন ছেলে রয়েছে। পড়শিরা জানিয়েছেন, এ দিন সকাল থেকে ওই প্রৌঢ়া বাড়িতেই ছিলেন। দুপুরে বাড়ির পোষা ছাগলের খাবারে খোঁজে বেরোন ওই প্রৌঢ়া। তার পরে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।
বেলা ৩টে নাগাদ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা জনস্বাস্থ্য কারিগরি জলপ্রকল্পের ভিতরে ওই প্রৌঢ়ার দেহ দেখতে পেয়ে এক মহিলা স্থানীয় লোকজনকে জানান। লোকজন গিয়ে দেখেন, ওই প্রকল্পের মধ্যে প্রৌঢ়ার দেহ পড়ে রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নখের আঁচড়ানোর দাগ রয়েছে। তাঁদের অনুমান, গণধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে প্রৌঢ়াকে। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বিকেল ৪টে থেকে কাজিপাড়ায় বহরমপুর-রামনগর রাজ্য সড়ক অবরোধ শুরু হয়। জেলা পুলিশের কর্তারা ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে তবেই অবরোধ ওঠে।
পড়শিরা জানান, প্রায় এক বিঘা জমির উপর ওই জলপ্রকল্প। সেখান থেকে কাজিপাড়া-সহ আশপাশের গ্রামে জল সরবরাহ করা হয়। এ দিন ঘটনার আগে পর্যন্ত ওই প্রকল্পের ভিতরে জনা চারেক রাজমিস্ত্রিকে কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। পরে তাঁদের কাউকেই আর দেখা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন— ‘‘জলপ্রকল্প সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল? সেখানে মদের বোতলও পাওয়া গিয়েছে। যেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ, সেখানে তা হলে কারা মদ খাচ্ছিল?’’
কামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের চাঁদগোপাল নন্দী বলছেন, ‘‘আমরাও চাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।’’