কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার। — নিজস্ব চিত্র।
একই দড়িতে ঝুলছে কিশোর-কিশোরীর দেহ। পাশে পড়ে থাকা স্কুল ব্যাগে পাওয়া গেল তাঁদের আধার কার্ড। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার করিমপুরের মহিষাখোলা এলাকায়। পুলিশ মনে করছে, ওই কিশোর-কিশোরীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে বুধবার রাতে তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা পুলিশের। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনা ঘিরে ঘনিয়েছে রহস্য।
কিশোরের নাম সজল মণ্ডল (১৭) এবং কিশোরীর নাম বিজয়া বিশ্বাস (১৫)। সজল তেহট্ট থানার রামজীবনপুর গ্রামের বাসিন্দা। বিজয়া তেহট্টের দেবনাথপুর এলাকার সাহাপাড়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে একটি মাঠের পাশে গাছ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দু’জনকে। করিমপুর থানার পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। উদ্ধার হয়েছে দু’টি স্কুল ব্যাগও। সেই ব্যাগে ছিল আধার কার্ড-সহ নানা নথি।
যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর উঠছে নানা প্রশ্ন। বিজয়ার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সজলের সঙ্গে বিয়েতে আপত্তি জানিয়েছিলেন তাঁর বাবা। বিজয়ার বাবা নির্মল বিশ্বাস বলেন, ‘‘বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল মেয়ে। তখন ওর আচরণে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখতে পাইনি। এর পর সন্ধেবেলাতেও ওকে বাড়ি ফিরতে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। সারা রাত দুশ্চিন্তায় কেটেছে আমাদের। আজ ভোরবেলায় খবর পাই ও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ছেলেটার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সেটা কিছুটা জানতাম। আমি ওকে বলেছিলাম, এখন ছোট আছ, বড় হও দেখা যাবে। তার পরও কেন এমন হল কিছু বুঝতে পারছি না।’’
সজলের জ্যাঠা সুবিনয় মণ্ডল বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে গত ছ’মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে হঠাৎ কেন আত্মহত্যা করল, বুঝতে পারছি না।’’পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমস্ত দিকও।