কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের আর্জি আবারও খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ পূর্ব নির্দেশই বহাল রাখল। এ নিয়ে তৃতীয় বার রায় পুনর্বিবেচনার রাজ্যের আর্জি খারিজ করা হল আদালতে। ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষেই এই রায় গেল। রায় দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের আবেদনের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
রায় দিতে গিয়ে আদালত আরও জানিয়েছে, পুনর্বিবেচনার আর্জি গ্রহণ করা হচ্ছে না। দীর্ঘ শুনানি শেষের পর কী ভুল আছে, খুঁজে বার করা আদালতের দায়িত্ব নয়। আদালতের বক্তব্য, ‘ডিটেলস এনকোয়ারি’ বা ‘স্ক্রুটিনি’ যা রাজ্য বলছে, আর প্রয়োজন নেই। রাজ্যের আবেদনের কোনও গ্রহণযোগ্যতা (মেরিট) নেই।
এই মামলার শুনানি পর্বে হাই কোর্টকে রাজ্য জানিয়েছিল, তহবিলে টাকা নেই বলে উঁচু হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু রাজ্যের এই যুক্তি আগেও গ্রাহ্য করেনি ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির লড়াই দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে অতীতেও মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। হাই কোর্টে রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছিল, মহার্ঘ ভাতা কর্মীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার। চলতি বছরের ২০ মে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্ত সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়।
এর মধ্যেই ডিএ নিয়ে রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। ‘রোপা রুল’ মেনে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য।
পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ ২০১৬ সালে মামলা করে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৩৪ শতাংশ হারে ডিএ পান। রাজ্য সরকার মাঝে ডিএ বাড়ালেও এখনও কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্যের কর্মীরা ৩১ শতাংশ কম পান।