ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পাশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার ব্যালট। রবিবার ধানতলায়। নিজস্ব চিত্র
ভোটের দিন ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে দেওয়া কিংবা বাক্স আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অথচ ভোট গণনার পাঁচ দিন পর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পাশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল শতাধিক ব্যালট। বিজেপির দাবি, তৃণমূল যে ভোট লুট করেছে, এটা তারই প্রমাণ। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ধানতলা থানার দত্তপুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭০ ও ১৭১ নম্বর বুথে গত ৮ জুলাই ভোট হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই গ্রামে তিনটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট চুরি করে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যে কারণে ভোটের দিন বেলা প্রায় ৩টে নাগাদ ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
দত্তপুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ৩০টি আসনের মধ্যে এ বার তৃণমূল ১৪টি, বিজেপি ১৪টি ও সিপিএম দু’টি আসনে জয়ী হয়েছে। ফলে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রবিবার সকালে হঠাৎই নারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের জঙ্গলে বেশ কিছু ব্যালট পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। খবর পেয়ে ধানতলা থানার পুলিশ আসে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, উদ্ধার হওয়া ব্যালটগুলি আধপোড়া অবস্থায় পড়ে ছিল।
দত্তপুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তথা ওই বুথের বিজেপি প্রার্থী অখিলচন্দ্র রাহা বলেন, "রানাঘাট ২ বিডিও এবং ধানতলা থানার পুলিশ সে দিন জোর করে বেলা ৩টের সময় ভোটগ্রহণ শুরু করেছিল। আমি মাত্র ৮৯ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছি।” তাঁর দাবি, “আজ যে ব্যালট উদ্ধার হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে গ্রামসভা ও পঞ্চায়েত সমিতিতে যে ব্যালটগুলিতে বিজেপিকে ভোট দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিই জঙ্গলে পড়ে ছিল। প্রতিটি ব্যালটে প্রিসাইডিং অফিসারের সই রয়েছে। ভোটের দিন তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, এখানে ভোট নেওয়া সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও জোর করে ভোট হয়েছে। আমরা এই বুথে পুনর্নির্বাচন চাই।"
ব্যালট উদ্ধারের খবর পেয়ে এলাকায় আসেন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী অসিত পান্ডেও। তাঁর কথায়, "আমরাও চাই, তদন্ত হোক। প্রশাসনকে যা সহযোগিতা করা প্রয়োজন, আমরা করবো।"
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রানাঘাট ২ বিডিও খোকন বর্মনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তাই তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি।