উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র
ডোমকলের অন্তরালে ‘বোমকল’ এখনও অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। সমাজে লোকচক্ষুর অন্তরালে, আরও একটা অন্ধকার সমাজের কথা লিখতে লিখতেই খবর এল শনিবার রাতে ডোমকলের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেফতার হয়েছে তিন জন। ডোমকল পুর এলাকার মেহেদিপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মাসাদুল হক ওরফে টনি নামের তৃণমূল নেতাকে।
অভিযোগ, দিন কয়েক আগে মেহেদিপাড়া এলাকায় বোমা কাণ্ডে জখম হওয়া মকলেস সরদারকে গ্রেফতার করার পরে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েই টনির নাম উঠে আসে।
এই ঘটনার পরে স্বস্তি পেয়েছে সাধারণ মানুষ। তাঁরা মনে করছেন, যে ভাবে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে নেমেছে তাতে কিছুটা হলেও সমঝে যাবে অস্ত্রের কারবারি ও ব্যবহারকারীরা। অন্য দিকে তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হওয়ায় শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা দুষ্কৃতীরাও চাপে থাকবে।
শনিবার রাতে কাটাকোপরা কুঠি এলাকা থেকে একটি দেশি পিস্তল সহ দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয় হাসানুজ্জামান ও ওয়াসিম আক্রম নামের দুই যুবকের কাছ থেকে। এদের বয়স ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। আর এটাই হল উদ্বেগের কথা। এত অল্প বয়সে কেন অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে তারা, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। তা হলে কি, ‘বোমকলে’র টান এখনও অনেক ক্ষেত্রে রয়েছে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুজনেই অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে জড়িত। আর এর ফলেই কপালে ভাঁজ পড়েছে পুলিশের। যে বয়সে তাদের স্কুল কলেজে লেখাপড়া করার কথা সেই বয়সে আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারে জড়িয়ে পড়েছে তারা। এক পুলিশকর্তা বলছেন এমন বয়সে আবেগের বসে কোন সময় হয়তো অস্ত্র হাতে তুলে নেয় তরুণ যুবকেরা। কিন্তু রীতিমতো কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া বড্ড দুশ্চিন্তার বিষয়।
ডোমকল থানার বাগডাঙা এলাকা থেকে অজিত মণ্ডল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় দু’টি পাইপ গান ও দুই রাউন্ড গুলি নিয়ে। কোথা থেকে আসছে এই আগ্নেয়াস্ত্র? সে প্রশ্ন উঠছে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিদের সঙ্গে ডোমকলের কারবারিদের যোগাযোগ ছিল, তা আবার জেগে উঠেছে। আর একটি সূত্রের খবর, গোপনে এই এলাকাতেই তৈরি হচ্ছে দেশি আগ্নেয়াস্ত্র। যার রমরমায় বোমার কদর কমেছে।
বোমা কাণ্ডে দলের নেতা গ্রেফতার হওয়ায় একুশে জুলাই এর আগে বেশ অস্বস্তিতে শাসক দল। যদিও ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘অন্যায় করলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূল কখনও অন্যায়কারীদের পাশে দাঁড়ায় না।’’ জেলা পুলিশের কর্তা কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলা বিশেষ করে ডোমকলে কোনও রকমের অস্ত্রের কারবার বা ব্যবহার মেনে নেবে না পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি যেই হোক না কেন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অস্ত্রের কারবারিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বোমা কাণ্ডে জড়িয়ে থাকার জন্য মাসাদুল হককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ (চলবে)