ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের ঘুঁটি ইতিমধ্যেই সাজাতে শুরু করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরেও। ভোটের দিকে তাকিয়ে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রশাসনিক রদবদল সেরে ফেলতে চায় নবান্নের শীর্ষমহল। সে জন্য বিভিন্ন আধিকারিক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ চলছে। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কাজে লাগানোর পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে বিভিন্ন কর্মী-আধিকারিকের মতও।
প্রশাসন সূত্রে দাবি, রদবদলের জন্য রাজ্য সরকারের হাতে দু’-আড়াই মাস সময় রয়েছে। সাধারণ ভাবে সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের কাজ শুরু হয়। জানুয়ারির গোড়ায় প্রকাশিত হয় পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা। এই সংশোধন প্রক্রিয়া চলাকালীন জেলার প্রশাসনিক স্তরে কোনও রদবদল করা যায় না। একান্তই যদি কোনও রদবদলের প্রয়োজন হয়, তা হলে নির্বাচন কমিশনের আগাম অনুমতি নিতে হয়।
তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের পর থেকে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক রদবদলে কোনও বাধা নেই। নির্ধারিত সময়ে ভোট হলে ফেব্রুয়ারি শেষ বা মার্চের গোড়ায় তার দিনক্ষণ ঘোষণা হবে। কিন্তু ভোটের ঠিক মুখে কোনও আধিকারিকের পক্ষে নতুন এলাকায় গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি বুঝে ওঠা কঠিন। সে কারণে রদবদলের ক্ষেত্রে জুলাই-অগস্টকে আদর্শ সময় বলে মনে করছেন অনেক প্রশাসনিক কর্তা। কয়েকদিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক বদল হয়েছেন।
রদবদলের তালিকায় জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও থেকে শুরু করে জেলাস্তরের অনেক ‘সিনিয়র’ আধিকারিকও থাকবেন। বিধানসভা ভোটে মহকুমাশাসক, সিনিয়র ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, ডিপিআরডিও, ডিপিএলও’রা রিটার্নিং অফিসার হন। ভোটের কাজে রিটার্নিং অফিসার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলা নির্বাচন অফিসার হন জেলাশাসক। আর ভোটের জন্য তৈরি তিন-চারটি করে সেলের দায়িত্বে থাকেন অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা।
সম্ভাব্য রদবদলের কথা মাথায় রেখে আধিকারিকদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করতে হয়। তাই জেলাস্তরে রদবদলের প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা, মতামত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, লোকসভা ভোটের পর থেকে বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমীকরণে নানা বদল ঘটেছে। সরাসরি কেউ এ নিয়ে মুখ না-খুললেও জেলাস্তরে জনপ্রতিনিধিদের অনেকে এই রদবদল সম্পর্কে সচেতন। প্রশাসনের আর একটি অংশের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘করোনা, আমপানের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক স্তরে নানা বদলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই এর সঙ্গে অন্য কিছুর যোগ খোঁজা অর্থহীন। রুটিন বদলি হবে।’’