ফাইল চিত্র।
পুলিশ, স্বাস্থ্যের পরে এ বার শিক্ষায় উত্তরবঙ্গের মন পেতে চাইছে রাজ্য সরকার। তারই অঙ্গ হিসেবে রাজবংশীদের আবেদন মেনে তাঁদের অননুমোদিত স্কুলগুলি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে নবান্ন।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজবংশীরা অনেক দিন ধরে আবেদন জানাচ্ছিলেন। তাঁদের প্রায় ২০০ অননুমোদিত স্কুল আছে। রাজবংশী ভাষায় সিলেবাস হয়ে গিয়েছে। ওঁরা চাইছেন, অন্যান্য ভাষার সঙ্গে এটাও পড়ানো হোক। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্কুলগুলি পরিদর্শন করে আস্তে আস্তে করে দেব। এ কাজ স্কুলশিক্ষা দফতর করবে।’’
কামতাপুরিদের আবেদন নিয়েও এ দিন আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কামতাপুরিরাও অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ওঁদের সিলেবাস এখনও তৈরি হয়নি। আরও আট মাস লাগবে। এক বছরের মধ্যে দু’টো স্কুল চালু করা হবে। বাদবাকি ধীরে ধীরে দেখে নেওয়া হবে। রাজবংশী ও কামতাপুরি ভাষার মধ্যে মিল আছে।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসক দলকে ‘নিরাশ’ করেছিল উত্তরবঙ্গ। নবান্নের বক্তব্য, তার পর থেকে রাজ্য সরকার একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প দিয়েছে উত্তরবঙ্গকে। কিছু দিন আগে কোচবিহারের মানুষদের দীর্ঘদিনের ‘আবেগ’ নারায়ণী সেনার আদলে রাজ্য পুলিশে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন এবং পাহাড়ের জন্য গোর্খা ব্যাটেলিয়ন গঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পৃথক ট্রমা কেয়ার কেন্দ্রও তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য। এ বার ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর
তরফে শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজবংশী ও কামতাপুরিদের আবেদন বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ার বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
এ দিন উত্তরবঙ্গে নতুন একটি ব্লক তৈরির সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। বানারহাট ব্লক আলাদা করে দেওয়া হয়েছে আগেই। এ বার উত্তরবঙ্গে আর একটি নতুন ব্লক তৈরি করা হল। তার নাম ক্রান্তি।
আগেই সব উদ্বাস্তু কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। এ দিন বাসন্তীতে ২২৬ একর জমিতে উদ্বাস্তুদের স্বত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নিজস্ব ৯৪টি (কলোনি) ছিল। সবাই নিঃশর্তে জমির স্বত্ব পেয়ে গিয়েছেন। যাঁরা এখনও পাননি, তাঁদেরও দিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারি জমি বা বেসরকারি জমিতে আরও কিছু কলোনি রয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবাইকেই আমরা স্বীকৃতি দিচ্ছি। আমরা চাই, উদ্বাস্তুরা নিঃশর্তে জমির দলিল, সুযোগ-সুবিধা পান।’’ মমতা জানান, কাকদ্বীপ-নামখানা থেকে শুরু করে দার্জিলিং-কালিম্পং। মেদিনীপুর-খড়গপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ১১৯টি কলোনিকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।