বাংলাদেশের রাস্তায় আন্দোলনকারীরা। ছবি: এএফপি।
বাংলাদেশে ‘অগস্ট বিপ্লব’। ছাত্র আন্দোলনে গদিচ্যুত শেখ হাসিনা। মুজিবকন্যা ইতিমধ্যে দেশও ছেড়েছেন। পড়শি দেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে পশ্চিমবঙ্গের সরকার। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে নবান্ন থেকে রাজ্যের জেলাগুলির প্রশাসনিক শীর্ষকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ গিয়েছে। সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানোর কথাও বলা হয়েছে।
প্রথমে কোটা সংস্কার আন্দোলন, তার পর হাসিনার সরকারের অপসারণের দাবিতে জনরোষ। সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ নতুন মাত্রা নেয়। রাজধানী তো বটেই বাংলাদেশের প্রান্তিক এলাকাগুলিতেও রাস্তার দখল নিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে কার্যত পালিয়ে বাঁচেন। হাসিনা দেশ ছাড়তেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবন’ ঢুকে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। জনরোষে ভাঙা পড়ে শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তিও। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, হামলা চলেছে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতেও।
ও পার বাংলার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে নবান্ন। সূত্রের খবর, রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপার ও কমিশনারদের বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বিশেষত সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নজর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কলকাতায় মিছিল করেন কয়েক জন বাংলাদেশি নাগরিক। সেই সব বিষয় মাথায় রেখেই রাজ্য পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই বাড়তি নজরদারির নির্দেশ।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো বিস্তারিত জানি না। তাই বাংলায় সবাইকে শান্ত থাকতে বলব। কেউ যেন উত্তেজনা না ছডান, প্ররোচনায় পা না দেন।’’ এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের লাইন মেনেই রাজ্য সরকার চলবে বলেও জানান তিনি।
অন্য দিকে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-ও। সোমবার বিকেলে বিএসএফের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে ইতিমধ্যে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন বিএসএফের ডিজি। তাঁর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।