Bangladesh Unrest

বাংলাদেশে আবার ক্ষমতার অলিন্দে সেনাপ্রবেশ! সাড়ে ১৭ বছর পর স্মৃতি ফিরছে ২০০৭-এর ১১ জানুয়ারির

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানান, তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ১৬:০৫
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

প্রায় দু’দশক পরে আবার বাংলাদেশে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠল সেনাবাহিনী। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি অশান্ত পরিস্থিতিতে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদের প্রত্যক্ষ তৎপরতার গঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নেতৃত্বে ছিলেন, অর্থনীতিবিদ তথা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ফখরুদ্দিন আহমেদ। এ বার জনরোষের জেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামানের ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।

Advertisement

জেনারেল জামান সোমবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে হাসিনার ইস্তফার কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করব।’’ জাতির উদ্দেশে ভাষণের আগে তিনি সব দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জানিয়ে জেনারেল জামানের দাবি, ‘‘সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে বাংলাদেশে আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং রাজনৈতিক কর্মীদের বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে সেনাপ্রধানের আশ্বাস, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি, প্রতিটি হত্যার বিচার হবে।

হাসিনার ইস্তফার দাবিতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ এবং হিংসার মধ্যেই রবিবার গভীর রাতে জেনারেল জানান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় তাঁর বাসভবনে বৈঠক করেছিলেন। তার পরেই জল্পনা তৈরি হয়, এ বার সরাসরি পরিস্থিতির উপর হস্তক্ষেপ করতে চলেছে সেনা। সূত্রের খবর, হাসিনা ইস্তফা দিয়ে তদারকি সরকারের ভার দিয়েছেন জাতীয় সংসদের (পার্লামেন্ট) স্পিকার শিরিন সারমিন চৌধুরির হাতে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেত্রী শিরিনকে সেনা মানবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ঘটনাচক্রে, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিনও আওয়ামী লীগের প্রাক্তন নেতা এবং ‘হাসিনা ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত।

Advertisement

১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনটি বড় মাপের সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছে ভারতের পূর্ব প্রান্তের প্রতিবেশী দেশ। সেনার হাতে নিহত হতে দেখেছে দুই প্রেসিডেন্ট— শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানকে। এ ছাড়া, গত সাড়ে পাঁচ দশকে একাধিক ছোট-বড় ব্যর্থ অভ্যুত্থানও হয়েছে সে দেশে। শেষ বার ২০০৭ সালে সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করেছিল বাংলাদেশ সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি-নিষেধের কারণে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সরসরি ক্ষমতার চাবিকাঠি হাতে নেননি।

সে সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রধামন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়েছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ-সহ বিরোধীরা সেই সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগে আন্দোলনে নামায় সক্রিয় হয় সেনা। প্রাথমিক ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসকে। কিন্তু তিনি অস্বীকৃত হওয়ায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদের সক্রিয়তায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফখরুদ্দিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement