শর্মিষ্ঠা দে।
সল্টলেকের বিই ব্লকের একটি বাড়ি থেকে শনিবার রাতে এক বৃদ্ধা এবং তাঁর প্রৌঢ়া মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, মৃতারা হলেন পাপিয়া দে (৭৭) এবং তাঁর মেয়ে শর্মিষ্ঠা দে (৫৬)। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ময়না-তদন্তের জন্য দু’টি দেহই আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হবে। রবিবার তাঁদের বাড়িতে জীবাণুমুক্তির কাজ চলে।
শর্মিষ্ঠাদেবী রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি এবং বর্তমানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের বিচ্ছিন্না স্ত্রী। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, শর্মিষ্ঠাদেবী মাকে নিয়ে সল্টলেকের ওই বাড়িতে থাকতেন। দিন পঁচিশ আগে পড়ে গিয়ে পাপিয়াদেবীর ফিমার বোনে আঘাত লাগে। অস্ত্রোপচারের পরে ১৫ দিন আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। সেই থেকে শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁর শয্যাক্ষত হয়ে গিয়েছিল। শর্মিষ্ঠাদেবী উচ্চ রক্তচাপ এবং শর্করাজনিত রোগে ভুগছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার আত্মীয়েরা খোঁজ নিতে গিয়ে মা ও মেয়ের কোনও সাড়াশব্দ পাননি। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের উপস্থিতিতেই ঘরে ঢোকা হয়। নিস্তেজ অবস্থায় পাওয়া যায় দু’জনকেই। খবর দেওয়া হয় বিধাননগর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগে। মেয়র-পারিষদ প্রণয় রায় জানান, চিফ মেডিক্যাল হেল্থ অফিসার মা ও মেয়েকে পরীক্ষা করেন। তাঁদের সল্টলেকেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রোগী নিয়ে ১৪ ঘণ্টা ঘুরল পুলিশ
পাপিয়াদেবীর পারিবারিক সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালে যে-পরিমাণ টাকা চাওয়া হয়েছিল, সেই সময় ওই পরিবারের কাছে তত টাকা ছিল না। ওই বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা চলছে। সেখানে ওই দুই প্রবীণ মহিলার সংক্রমণের আশঙ্কা থাকায় তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। শনিবার কলকাতায় একটি হাসপাতালে দু’জনের ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সন্ধ্যায় আত্মীয়েরা তাঁদের বাড়িতে যান। কিন্তু মা-মেয়ের কোনও সাড়া না-মেলায় চিকিৎসক ডাকা হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নয়া ভবনেও ভাঙন বর্ধমান স্টেশনে
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের নেতৃত্বে শর্মিষ্ঠাদেবী ওই দলে যোগ দেন। তবে লোকসভা ভোটের পর থেকে ধীরে ধীরে বিজেপিতে তাঁর সক্রিয়তা কমতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে আর দেখা যায়নি শর্মিষ্ঠাদেবীকে।