নিহত বন্ধুপ্রকাশ পাল। —ফাইল চিত্র
বন্ধুপ্রকাশের মোবাইল এখনও ‘নিখোঁজ’! জিয়াগঞ্জে সপরিবারের খুনের পর থেকেই কখনও সিআইডি, কখনও পুলিশের বড় কর্তারা খোঁজ করলেও ঘটনার ১২ দিন পরেও সেই মোবাইল এখনও উদ্ধার করা যায়নি। মোবাইল পেতে বন্ধুপ্রকাশের বাড়ির ছাদে ও বাড়ির পাশে ঝোপ-জঙ্গলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু মোবাইলের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলছেন, ‘‘ওই খুনের মামলায় বন্ধুপ্রকাশের মোবাইল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। মোবাইলে থাকা বিভিন্ন তথ্য থেকে অনেক সূত্র পাওয়া সম্ভব যা তদন্তের কাজে লাগবে। ফলে মোবাইল খুঁজে পাওয়া খুব জরুরি।’’ তাই ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে মোবাইল।
৮ অক্টোবর, দশমীর সকালে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ লেবুবাগানের বাড়িতে খুন হন বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি এবং তাঁদের ছ’বছরের ছেলে অঙ্গন। ঘটনার পর থেকেই বন্ধুপ্রকাশের মোবাইলের খোঁজ নেই।
যদিও ঘটনার পর-পরই বন্ধুপ্রকাশের মোবাইলে ফোন করেছিলেন দুধ বিক্রেতা রাজীব দাস। রবিবার রাজীব জানান, দাদার (বন্ধুপ্রকাশ) মোবাইলে ফোন করলে তা বেজে গিয়েছিল। তবে ঘরের মধ্যে ফোন বাজলে শুনতে পেতাম, তা শোনা যায়নি। আমি সে কথা পুলিশকে জানিয়েছি।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও অনুমান করেছিল, খুনি মোবাইলটি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছে। ঘটনার সাত দিন পরে খুনের মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরাকে গ্রেফতার করলেও ওই মোবাইলের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকা উৎপলও মোবাইলের হদিস দিতে পারেনি। পুলিশের জেরায় উৎপল জানিয়েছে, সে মোবাইল নিয়ে যায়নি। তা হলে মোবাইল গেল কোথায়?
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘মোবাইলে খোঁজ চলছে।’’ এ দিকে পুলিশ হেফাজতে থাকা বন্ধুপ্রকাশের বন্ধু শৌভিক বণিককে জেরা করে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। যেমন ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এক অর্থলগ্নি সংস্থার নামে টাকা তুলত শৌভিক ও বন্ধুপ্রকাশ। শৌভিককে জেরা করে পুলিশ কলকাতায় ওই অর্থলগ্নি সংস্থার যেখানে অফিস ছিল সাগরদিঘি থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে খোঁজ নিয়েও এসেছে। জেলা
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সৌভিক বন্ধুপ্রকাশকে সঙ্গে নিয়ে একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থায় কাজ করতেন। কীভাবে, কাদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন তাঁর খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ২০০৪ সাল থেকে বন্ধুপ্রকাশ বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থায় সৌভিকের সঙ্গে কাজ করতেন। বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করলেও বন্ধুপ্রকাশের বর্তমানে আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল দুধওয়ালার কাছেও টাকা বাকি ছিল। পুলিশ সুপার বলছেন, ‘‘সৌভিকের সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশ বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থায় কাজ করত। লোকজনের কাছ থেকে টাকা তুললেও তা অনেক ক্ষেত্রে সংস্থায় জমা দিত না।’’