ঝালদা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধিদের দলবদলের মাধ্যমে সবে পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছে তৃণমূল। এর মধ্যেই পুর-নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ঝালদা পুরসভাকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) চিঠি পাঠানোয় নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে।
সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় মানছেন, ‘‘ইডির চিঠি এসেছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, সোমবার ডাকে আসা ইডির চিঠিতে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ওই পুরসভায় স্থায়ী ও অস্থায়ী পদে নিযুক্তদের এবং পুরপ্রধান ও পুরসভার নির্বাহী আধিকারিকদের নাম ও ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছে। পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক বিধান পান্ডে বলেন, ‘‘ইডি সাত দিন সময় দিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব তথ্য পাঠানো হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই সময়কালের মধ্যে পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের সুরেশ আগরওয়াল এবং প্রদীপ কর্মকার। অল্প কিছু দিন পুরপ্রধান ছিলেন কংগ্রেসের মধুসূদন কয়াল। বর্তমান পুরপ্রধান শীলা দায়িত্বে রয়েছেন কয়েক মাস। ২০২০-তে সুরেশের সময়ে দু’জন অস্থায়ী কর্মীর নিয়োগ হয়। সুরেশের দাবি, ‘‘নিয়োগ নিয়ম মেনেই হয়েছে।’’ প্রদীপেরও দাবি, ২০২০-তে মজদুর পদে ১১ জনকে (স্থায়ী) সম্পূর্ণ বিধি মেনেই নিয়োগ করা হয়েছে।’’
গত ১১ মাস ধরে ঝালদা পুরসভার ক্ষমতা দখল ঘিরে তৃণমূল ও কংগ্রেসের দড়ি টানাটানি চলছে। বিরোধীদের ডাকা অনাস্থায় সুরেশ পদ হারান। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে পুরপ্রধান হন শীলা। ৬ সেপ্টেম্বর শীলা এবং কংগ্রেসের চার পুরপ্রতিনিধি ঘাসফুলে যোগ দেওয়ায় ওই পুরসভা দখল করে তৃণমূল। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল ভয় দেখিয়ে দল বদল করিয়ে পুরসভা দখল করেছে। তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকা করে।
তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ইডির চিঠি আসার কারণ নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, ‘‘তৃণমূলের দুই পুরপ্রধানের সময়ে অল্প কয়েক জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানে গলদ রয়েছে কি না, ইডি দেখুক।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা আবার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘‘ইডির সঙ্গে সিবিআই-ও ঢুকবে।’’
নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়েছে দাবি করে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে পুরুলিয়া পুরসভাকেও ইডি চিঠি দিয়েছে বলে শুনেছি। লোকসভা নির্বাচনের আগে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এ সব করা হচ্ছে।’’