(বাঁ দিক থেকে) শিশির অধিকারী, সিভি আনন্দ বোস, দিব্যেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। সোমবার বিকেলে রাজভবনে আসেন দুই সাংসদই। এক ঘণ্টার বেশি সময় রাজভবনে ছিলেন তাঁরা। রাজ্যপালই তাঁদের রাজভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে দিব্যেন্দু এই সাক্ষাতকে নিছক ‘সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ’ বলে দাবি করলেও তাতে রাজনৈতিক গুঞ্জন থেমে থাকেনি।
বৈঠক শেষ করে রাজভবনের বাইরে বেরিয়ে গাড়িতেই বসেই সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন শিশির। অশীতিপর সাংসদ শিশির বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে আমার পূর্ব পরিচয় রয়েছে। তিনি এখানে জয়েন করার পরেই আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতদিন সময় পাইনি, কিন্তু এখন সময় পেলাম। তাই এসে দেখা করলাম। এই সাক্ষাৎ সৌজন্যের, এর বেশি কিছু নয়।’’ এরপরেই কাঁথির সাংসদ প্রশ্ন করা হয়, কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে কি? জবাবে এই প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক কথাবার্তা হয়নি। তিনি কোনও কথা বলেননি, আমরাও কোনও কথা বলিনি।’’ আপনি কি রাজ্যপালকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে যে কেউ আসতে পারেন। পাহাড় থেকে অনেক মানুষই সমুদ্র দেখতে আসেন। তিনিও এলে, আমার ভালই লাগবে।’’
খাতায় কলমে এখনও শিশির-দিব্যেন্দু তৃণমূলের সাংসদ। ২০২১ সালের ১ মার্চ এগরায় অমিত শাহের জনসভার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিশির। শিশিরের সাংসদপদ খারিজের দাবিতে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল সংসদীয় দল। আবার তৃণমূলে নিষ্ক্রিয় থাকলেও বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে সরাসরি দেখা যায়নি দিব্যেন্দুকে। যদিও শুক্রবার সন্দেশখালিতে ইডি-র অফিসারদের উপর হামলার পরে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছিলেন দিব্যেন্দু। লোকসভা ভোটের আগে দিব্যেন্দু বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে ধারণা পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের একাংশের। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তার পর তৃণমূলে থাকলেও প্রবীণ সাংসদ শিশির ও তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তৃণমূল বার বার প্রশ্ন তুলেছে। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেও তাই কোনও বিতর্কিত বা রাজনৈতিক মন্তব্য করতে চাননি অধিকারী পিতা-পুত্র জুটি, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।