—প্রতীকী চিত্র।
গুজরাত সরকারের বিরুদ্ধে সোমবার বড় রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলেছে, বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের ঘটনায় মুক্তি পাওয়া ১১ জনকে ফের জেলে পাঠাতে হবে। গুজরাত সরকারের সেই মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম মামলা করেছিলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য সুহাসিনী আলি এবং দুই সমাজকর্মী রেবতী লাউল, রূপরেখ ভর্মা। তার পর পৃথক ভাবে মামলা করেন তৃণমূলের অধুনা বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সুহাসিনী, মহুয়াদের মামলার পরে বিলকিস নিজেও একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। সব শুনানি একসঙ্গেই চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেতে হয়েছে গুজরাত সরকারকে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, তা এক্তিয়ার বহির্ভূত। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ, ‘জালিয়াতি’ করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে অন্যতম মামলাকারী সুহাসিনী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এটা খুবই ইতিবাচক যে সুপ্রিম কোর্টে ধর্ষক, খুনিদের ফের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে বিজেপি নেতাদের এ বার জবাব দেওয়া উচিত, কেন বিরলতম অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের তারা ছেড়ে দিয়েছিল।’’ ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট মামলা করেছিলেন সুহাসিনী, মহুয়ারা। সুহাসিনীর সঙ্গে কথা বলা গেলেও, মহুয়া এবং রেবতীর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মুক্তির পর দেখা গিয়েছিল, ১১ জনকে মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হচ্ছে। যাতে তীব্র আতঙ্কপ্রকাশ করেছিলেন বিলকিস নিজে। ২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছিল।