জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভাতেই গরহাজির জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। আর তা নিয়েই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে দলের অন্দরেই। রবিবারের সভায় বক্তৃতা করতে উঠে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক একে একে বিধায়ক ও নেতাদের নাম উল্লেখ করেন। সেই সময় তিনি দেখেন স্থানীয় সাংসদ নেই সভায়। যদিও, তাতে সভা পরিচালনায় কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি। সভার শেষে এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘প্রতিমা মণ্ডলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সভায় আসতে পারেননি।’’ যুব সংগঠনের জেলা সভাপতির এমন সাফাইতে কার্যত স্তম্ভিত জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা। তাঁর অভিযোগ, সাংসদ হিসাবে তাঁকে জনসভায় আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। কয়েক দিন আগে তাঁর জনসংযোগ কার্যালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল মাত্র। তাও সেই চিঠিতে বিধায়কদের উপস্থিত থাকার কথা লেখা থাকলেও, উল্লেখ ছিল না সাংসদকে আমন্ত্রণের কথা। এমনকি দলের তরফে সরাসরি তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি বলেও অভিযোগ প্রতিমার।
সভায় অনুপস্থিত থাকা নিয়ে বলতে সওকতের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জয়নগরের সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০১৬ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে আমাকে দলের অনেক অনুষ্ঠানেই ডাকা হয়নি। বিশেষ করে সওকতের এলাকার কোনও অনুষ্ঠানেই ডাকা হয় না। আমাকে ছাড়াই লোকসভা নির্বাচন করানো হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অন্দরে সাংসদের বিদ্রোহ কোনও নতুন ঘটনা নয়। বিদ্রোহী হয়ে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি দলের জেলা নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন বীরভুমের সাংসদ শতাব্দী রায় ও হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই অভিষেক বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। আপাতত দু’জনেই দলের প্রতি প্রকাশ্যে আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। কিন্তু এদিন কুলতলির সভায় যোগ না দিয়ে প্রতিমা দলের বিরুদ্ধেই সোচ্চার হয়েছেন। সূত্রের খবর, বহুদিন ধরেই সওকত বনাম প্রতিমার ঠান্ডা লড়াই চলছিল জয়গনর এলাকার রাজনীতিতে। এদিন অভিষেকের সভাকে ঘিরে সেই অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ প্রকাশ্যে চলে এল বলেই মনে করা হচ্ছে।