গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পাসপোর্ট-কাণ্ডে একের পর এক গ্রেফতারি। এ বার পূর্ব বর্ধমান থেকে ভাস্কর সামন্ত নামে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের বাড়ি হুগলির খানাকুল এলাকায়। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় জাল শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগে দিন কয়েক আগে হুগলির সিঙ্গুর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে জালিয়াতিতে ব্যবহৃত মোবাইল, সিমকার্ড এবং একটি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভাস্করের গ্রেফতারির পর জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রে আরও অনেকে জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন বর্ধমান শহরের নতুনপল্লির বাসিন্দা রিঙ্কা দাস। আবেদনপত্রের সঙ্গে জন্ম শংসাপত্র জমা দেন। শংসাপত্রটি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দেওয়া বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। আবেদনপত্র ভেরিফিকেশনের জন্য জেলা গোয়েন্দা দফতরে পাঠানো হয়েছিল। তার পরই রিঙ্কাকে সমস্ত নথিপত্র সমেত ডেকে পাঠায় গোয়েন্দা দফতর। তদন্তে উঠে আসে, জাল শংসাপত্র দিয়ে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা হচ্ছিল।
বর্ধমান থেকে গ্রেফতার জনৈক ভাস্কর সামন্ত। —নিজস্ব চিত্র।
গোয়েন্দা বিভাগের তরফে বর্ধমান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৯ ডিসেম্বর রিঙ্কাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ওই কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর এলাকার বাসিন্দা স্বরূপ রায় ওরফে রাণুকে পাকড়াও করে পুলিশ। হেফাজতে থাকা স্বরূপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শংসাপত্র জালিয়াতি কাণ্ডে জনৈক গণেশ চক্রবর্তীর জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিশ। তাঁকেও পাকড়াও করা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, গণেশ, অনির্বাণ সামন্ত এবং ভাস্কর সামন্ত ওই চক্রের মূল মাথা। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জাল ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্য জুড়ে জাল জন্ম শংসাপত্র সরবরাহ করতেন কয়েক জন। তাঁদের পাঁচ পাণ্ডা বর্ধমান জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। সিঙ্গুর থেকে প্রথমে গণেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনির্বাণ সামন্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। সবশেষে হুগলির খানাকুল থেকে ধরা পড় ওই চক্রের মূল পাণ্ডা ভাস্কর। ধৃতের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, দু’টি ফোন এবং একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”