Mithun Chakraborty

মিঠুনকে সামনে রেখে শক্তিপরীক্ষা পদ্মের, পাঁচ দিনে সুকান্ত দেখাবেন সংগঠনের ‘আসল’ ছবি

মিঠুনের সঙ্গে থাকবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই জুটির প্রথম সভা বুধবার, পুরুলিয়াতে। তার পর টানা চার দিন ধরে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, আসানসোল এবং বোলপুরে সভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০২
Share:

পঞ্চায়েতের আগে সংগঠনের হাল দেখতে গাড়িতে জেলা সফর মিঠুন-সুকান্তের। — ফাইল ছবি।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি শিবিরের অন্যতম ‘অস্ত্র’ মিঠুন চক্রবর্তী কলকাতায় পৌঁছে গেলেন। ‘মহাগুরু’কে সামনে রেখেই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে জুটি বেঁধে বুধবার থেকেই শুরু হয়ে যাবে মিঠুনের রাঢ়বঙ্গ পরিক্রমা। এই দফায় পাঁচটি সভা করবে মিঠুন-সুকান্ত জুটি। তাঁরা খতিয়ে দেখবেন তৃণমূলস্তরে পদ্মের বুথ সংগঠনের হাল-হকিকত।

Advertisement

মহাতারকা মিঠুন নয়, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই প্রথম বাংলা সংগঠক মিঠুনকে দেখতে চলেছে। আনন্দবাজার অনলাইনই প্রথম জানিয়েছিল, ‘সংগঠক’ মিঠুনের সঙ্গে থাকবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। এই জুটির প্রথম সভা বুধবার পুরুলিয়াতে। তার পর টানা চার দিন ধরে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, আসানসোল এবং বোলপুরে সভা। বিজেপির সাংগঠনিক পরিভাষায় যার নাম ‘পঞ্চায়েত কার্যকর্তা সম্মেলন’। তবে অন্যান্য সফরের সঙ্গে এ বারের মূল পার্থক্য, গোটা পথই গাড়িতে ঘুরবেন মিঠুন-সুকান্ত। তাঁদের সঙ্গেই থাকবেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো।

অমিত শাহ থেকে মঙ্গল পাণ্ডে— বিজেপির দিল্লির নেতারা যে যখন বাংলায় এসেছেন, নিয়ম করে বলে গিয়েছেন বুথস্তরে সংগঠন মজবুত করার প্রয়োজনীয়তার কথা। বস্তুত, পূর্ববর্তী একাধিক নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পিছনে যে বুথস্তরের সাংগঠনিক দুর্বলতা অন্যতম কারণ, তা নিয়ে দ্বিমত নেই গেরুয়া শিবিরের নেতাদের মধ্যেও। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই অবস্থায় বুথস্তরের সংগঠনের হাল কেমন তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখবে মিঠুন-সুকান্ত জুটি। সূত্রের খবর, বাংলায় বুথস্তরের সংগঠনের হাল কেমন দেখলেন, সব জায়গায় বুথ কমিটি তৈরি করা গিয়েছে কি না, তা দিল্লি গিয়ে সর্বোচ্চ নেতৃত্বকেও জানাবেন মিঠুন। মূলত, এই কারণেই এ বার ট্রেন সফরের পরিবর্তে গোটা যাত্রাপথটিই গাড়িতে করে ঘুরবেন মিঠুন, সুকান্তেরা। যাতে তৃণমূলস্তরের পরিস্থিতি আরও ভাল ভাবে পরখ করা যায়। তেমন প্রয়োজন মনে করলে যেখানে-সেখানে থমকেও যেতে পারে ‘মহাগুরু’র গাড়ির চাকা।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত কার্যকর্তা সম্মেলনে হাজির থাকবেন এলাকার বিজেপি বিধায়ক, সাংসদেরা। একই সঙ্গে প্রতি বুথ থেকে অন্তত এক জন করে বিজেপি নেতাকেও বাধ্যতামূলক ভাবে হাজির হতে হবে। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মাতবেন মিঠুন। কিন্তু গোষ্ঠীকোন্দলে দীর্ণ বঙ্গ বিজেপি সুকান্ত-মিঠুন জুটির সামনে বুথস্তরে একতা তুলে ধরতে পারবে কি? বিজেপির একাংশ বলছে, ‘‘আর কিছু না হোক, মিঠুনকে দেখার জন্য বুথের লোকজন ভিড় জমাবেনই।’’ যদিও তা মানতে নারাজ বিজেপি নেতাদেরই আর একটি অংশ। পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় বলেন, ‘‘বিজেপি সংগঠননির্ভর দল, ব্যক্তিনির্ভর নয়। তাই দলের নির্দেশেই সকলে আসবেন। মিঠুন চক্রর্তীর আকর্ষণ আছে ঠিকই, কিন্তু সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ দলের নির্দেশ।’’

রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মূল শক্তির জায়গা তাদের বুথস্তরে জমাট সংগঠন। বিজেপির দিল্লির নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন, বুথস্তরে সংগঠনকে মজবুত না করতে পারলে তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর নেওয়া কার্যত অসম্ভব। শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে গেরুয়া শিবিরের তৃণমূলস্তরের সংগঠনকে যতটা সম্ভব পোক্ত করে তৃণমূলের মোকাবিলা করার প্রয়াস নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কাজে তাঁদের সহায় মিঠুন-সুকান্ত জুটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement