পরিজনহীন মহিলার দেহ সৎকারে এগিয়ে আসেন এলাকার শেখ রুস্তম, শেখ কালাম, শেখ আবেদরাই। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রীতির নজির গড়লেন চুঁচুড়ার মোগলপুরা এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। রবিবার এলাকার এক মধ্য়বয়সি মহিলার দেহ সৎকার করতে এগিয়ে এলেন তাঁরা। স্বজনহীন ওই মহিলার দেহ সৎকারের পর বললেন, “এটাই তো মানবধর্ম!”
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন মোগলপুরার বাসিন্দা পুতুল চৌধুরী। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলা বৃদ্ধা মা-কে নিয়ে থাকতেন। পুতুলের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁকে চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন পাড়ার কয়েক জন যুবক। তবে রবিবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় পুতুলের। এর পর পরিজনহীন ওই মহিলার দেহ সৎকারে এগিয়ে আসেন এলাকার শেখ রুস্তম, শেখ কালাম, শেখ আবেদরাই। সৎকারের জন্য নিজেদের টাকাতে খাট, ফুল-সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনেন তাঁরা। এর পর পুতুলের দেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যান শ্মশানে।
করোনার মতো অতিমারি পরিস্থিতিতে যখন মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনেকেই ইতস্তত করছেন, সে সময় শেখ রুস্তমদের এ কাজে অভিভূত অনেকেই। তবে রুস্তম বলেন, “এটাই তো মানবধর্ম। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জাত-ধর্ম বিচার করি না। এক জন হিন্দু মহিলা অসুস্থ হয়েছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তাঁর মৃত্যু হল। তাঁর দেহ সৎকারের বন্দোবস্ত করলাম। মৃতার পরিবারের আত্মীয়রা থাকলে তাঁরা নিশ্চয়ই সে ব্যবস্থা করতেন।”
রুস্তমদের এ কাজে এলাকার ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইমামবাড়ার বাসিন্দা সৌমিত্র সিংহ। তিনি বলেন, “মোগলপুরা ইমামবাড়া অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন। এটাই এ এলাকার ঐতিহ্য। একসঙ্গে ইদ-দুর্গোৎসব পালন করা হয়। এই সম্প্রীতিই এলাকার বাসিন্দাদের মিলেমিশে থাকতে শিখিয়েছে।”