প্রতীকী ছবি।
মুর্শিদাবাদের খাসমহল সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের সময় বিএসএফের হাতে আটক হয়েছে দুই পাচারকারী। উদ্ধার হয়েছে একটি নৌকো আর তাতে ঠেসাঠেসি করে চাপানো ১৪টি গরু। গরু-পাচারের ভরা মরসুমে এমন ঘটনা নুতন নয়। নতুন এটাই, দীর্ঘ জেরার পরে আটক কাকমারি চরের ওই যুবক জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিক সে। দিল্লি থেকে গ্রামে ফিরে মাসের পর মাস রুজির চেষ্টা করেও কোনও কাজ খুঁজে পায়নি সে। পেটের টানেই জড়িয়ে পড়েছিল গরু-পাচারের সঙ্গে।
পুলিশের জেরায় ওই যুবক জানায়, লকডাউনে, ভিন রাজ্যে বন্ধক দিয়ে এসেছিল রুজির উপায়। সঞ্চয়ের যা কিছু উপুর করে ভাড়া করেছিল বাস, তার পর আড়াই দিনের চেষ্টায় গ্রামে ফেরা। তবে, স্বপ্নটা মেলেনি। কাজ মেলেনি গ্রামে। ফিরতেও পারেনি কর্মস্থলে। আর সেই সূত্রেই রুজির চেষ্টায় এক সময়ে জড়িয়ে পড়েছিল পাচারেরে সঙ্গে।
দীর্ঘক্ষণ জেরায় যা স্পষ্ট হয়েছে, এলাকারই পরিচিত গরু পাচারকারীরা কাজ হারানো শ্রমিকদের রাখাল হিসেবে কম পয়সা দিয়ে কাজে লাগাচ্ছে। তারাও সামান্য আয়ের পথ খুঁজতে এই সহজ-রুজির ফাঁদে পা দিয়ে ফেলছে। ধৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিককে শুক্রবার সাগরপাড়া থানায় পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ, বিএসএফের একটি সূত্র বলছে, তাদের কাছেও কবুল করেছে সে, সংসার টানতেই এ পথে পা বাড়ানো তার।
বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত পাচারে কাকমারি একটি হটস্পট বলেই চিহ্নিত পুলিশ ও বিএসএফের কাছে। গরু পাচারের আগাম খবর পেয়ে বিএসএফের জওয়ানেরা খাসমহল আউটপোস্টের কাছে মোতায়েন ছিল।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাদের নজরে আসে কয়েক জন পাচারকারী নদীর পাড়ে গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। জওয়ানেরা তাড়া করে ১৪টি গরু সহ নৌকোটিকে আটক করে। তাদের হাতে ধরা পরে দুই পাচারকারীও। ধৃত অন্য পাচারকারী বাংলাদেশের রাজশাহীর পরানপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আব্দুল খালেক।
বিএসএফ জানায়, ধৃত ওই পরিযায়ী জেরায় জানিয়েছে, গত দু বছর ধরে সে দিল্লির আয়া নগরে মেট্রো স্টেশনে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ও লকডাউনে সে দিল্লি থেকে নিজের গ্রামে ফিরে আসে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে এতদিন ছোটখাট পাচারে সাহায্য করার অভিযোগ যে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ওঠেনি এমন নয়। আর তা নিয়ে এ বার উদ্বেগ বাড়ছে সীমান্ত প্রহরী থেকে প্রশাসন সকলেরই।