ট্যাংরাখালিতে অসম্পূর্ণ পর্যটক আবাস। নিজস্ব চিত্র
কাঁসাই, কেলেঘাই, চণ্ডীয়া নদীর সংযোগস্থলে রয়েছে নন্দকুমারের টেংরাখালি। তিন নদীর সংযোগস্থলের ওই এলাকাটি পিকনিক স্পট হিসাবে গড়তে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। পর্যটকদের কথা ভেবে অতিথি নিবাস তৈরিরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই মতো টেংরাখালি ফেরিঘাটের পাশে দ্বিতল অতিথি নিবাস তৈরির কাজ শুরু হয় প্রায় ছ’বছর আগে। কিন্তু এখনও ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ওই কাজে নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
টেংরাখালি ফেরিঘাটের ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে ভগবানপুর এলাকা। তিনটি নদীর সংযোগস্থল হওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে প্রতি বছর শীতকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এখানে বনভোজনের জন্য ভিড় জমান। এছাড়াও অন্য সময়ও লোকজন ওই এলাকায় বেড়াতে আসেন। এলাকাটিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য টেংরাখালি ফেরিঘাট সংলগ্ন নদীতীরকে ‘পিকনিক স্পট’ হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতি। এ জন্য টেংরাখালি ফেরিঘাটের কাছে পর্যটকদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা ও পিকনিক করার জন্য একটি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এজন্য নদী তীরে মাটি ভরাট করা হয় ও চারারোপণ করা হয়েছিল।
দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য গত ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে আইএসজিপি প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ওই ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর পরে মাঝপথেই তা থমকে গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। গত কয়েক বছরেও ওই ভবন নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। দ্বিতল ভবনের কাঠামো তৈরি করা হলেও বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা হয়নি। ফলে ওই ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অসম্পূর্ণ ওই ভবন ও সংলগ্ন চত্বরে এখন পানীয় জল প্রকল্পের কাজে যুক্ত কর্মীরা থাকেন এবং জলের পাইপ ও বিভিন্ন সামগ্রী মজুত রাখা হয়।
নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সভাপতি তথা বিজেপি নেতা সুকুমার বেরার অভিযোগ, ‘‘টেংরাখালিকে পিকনিক স্পট’ হিসেবে গড়ে তুলতে ও পর্যটকদের রাত্রিবাসের জন্য দ্বিতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই ভবনের কাজ সম্পূর্ণ করতে পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেননি। ফলে ভবন নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’ এমন অভিযোগ অস্বীকার করে নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা দীননাথ দাস বলেন, ‘‘টেংরাখালিতে পর্যটকদের রাত্রিবাস এবং পিকনিকের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে কিছু প্রশাসনিক সমস্যা রয়েছে। ওই সমস্যা কাটিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।’’