মঙ্গলবার আদালতে মৌসুমী রায়। নিজস্ব চিত্র
মামলার রায়দান হয়েছে মাসখানেক আগে। দোষী স্বাব্যস্ত হয়েছে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই। কিন্তু রায়দানের আগে থেকেই ফেরার ছিল ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা পিনকনে’র কর্ণাধার মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী মৌসুমী রায়। মঙ্গলবার সেই ফেরার মৌসুমী তমলুক আদালতে আত্মসমর্পণ করল। সেই সঙ্গে জমা দিল নিজের করোনা আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে (তৃতীয়) আত্মসমর্পণ করে মৌসুমী। এ দিন আদালতে আত্মসমর্পণের পর শুনানির সময় আদালতে শোরগোল পড়ে যায়। কারণ, মৌসুমীর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট পেশ করেন তার আইনজীবী। ওই রিপোর্ট অনুয়ায়ী, গত ৫ অক্টোবর ওড়িশার রাউরকেল্লা গভর্নমেন্ট হাসপাতালে ‘র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্টে’ মৌসুমীর করোনা ধরা পড়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাউরকেল্লা কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক।
করোনা সুরক্ষা বিধি না মেনে মৌসুমী আদালতে হাজির না হওয়ায় এজলাশে হাজির আইনজীবী ও আদালত কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায় বলে অভিযোগ। মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌমেনকুমার দত্ত প্রশ্ন তোলেন যে, আগাম কিছু না জানিয়ে, করোনার সুরক্ষা বিধি না মেনে আক্রান্ত একজনকে কীভাবে আদালতে উপস্থিত করা হল কেন? এতে আদালতে উপস্থিত ব্যক্তিরা বিপদে পড়লে তার দায় কে নেবে! তবে মৌসুমীর পক্ষের আইনজীবী আদালতে এ জন্য ক্ষমা চেয়ে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে এ দিন সে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে।
মৌসুমীর জামিনের আবেদন জানানো হয় এ দিন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) সঞ্জীব দে নির্দেশ দেন, মৌসুমী করোনা মুক্ত হওয়ার পরে তাকে আদালতে হাজির করতে হবে। বিচারক মৌসুমীকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন ও তমলুক সংশোধানাগারের সুপারকে নির্দেশ দেন যে, করোনা বিধি মেনে সংশোধানাগারে যেন তাকে রাখা হয়। করোনা আক্রান্ত মৌসুমীকে কোয়ারান্টিনে রাখা ও উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য বিচারক জেলা হাসপাতালের সুপারকেও নির্দেশ দিয়েছেন। মৌসুমীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট হাসপাতাল সুপারকে আগামী ২৬ নভেম্বর আদালতে জমা দিতে হবে।
মৌসুমীর পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম খাটুয়া বলেন, ‘‘আমার মক্কেল করোনা আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসা চলছে। আদালত তাঁকে পলাতক ঘোষণা করেছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনেই এ দিন তিনি আদালতে হাজির হয়েছিলেন।’’
উল্লেখ্য, পিনকন মামলায় মনোরঞ্জন, মৌসুমী-সহ মোট আট জনকে গত ৩ অক্টোবর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারক।