কৃষ্ণকলি, কথাকলি। নিজস্ব চিত্র
ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে থেকেই একসঙ্গে তারা। বড় হওয়ার পরে দু’জনে একই স্বপ্ন দেখে। ক্রিকেটার হবে। কাঁথির যমজ বোন কৃষ্ণকলি আর কথাকলি ত্রিপাঠী এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফল করেছে। কৃষ্ণকলি মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় রাজ্যে নবম হয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। আর কৃষ্ণকলির যমজ বোন কথাকলি পেয়েছে ৬৬১ নম্বর। দু’জনেই কাঁথির চন্দ্রামণি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
কাঁথি শহরের আঠিলাগড়ির বাসিন্দা কৃষ্ণকলি আর কথাকলি। বাবা প্রতাপ ত্রিপাঠী পেশায় আইনজীবী। আর মা মমতা রামনগরের ইসলামপুর হাই স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষিকা। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মেধা তালিকায় কাঁথি মহকুমা থেকে একমাত্র কৃষ্ণকলি স্থান পেয়েছে। অন্যবারের তুলনায় যা একেবারেই খারাপ ফল বলে মনে করে মহকুমার শিক্ষক মহল। কৃষ্ণকলি আর কথাকলির ফল নিয়ে প্রতিবেশীদের পাশাপাশি সহপাঠী এবং শিক্ষিকারা উল্লসিত।
যমজ বোনের মা মমতা ত্রিপাঠী বলছেন, ‘‘মাধ্যমিকের নম্বর একটু কম-বেশি হয়েছে ঠিকই। তবে একজনের সাফল্যে আরেকজন উচ্ছ্বসিত। এটা দু’জনেরই সাফল্য। আসলে ওরা হরিহর আত্মা।’’ সেটা বোঝা গেল বাড়িতে গিয়েই। বাড়িতে রোজ দু’বেলা নিয়মিত একই খাটের উপর দুই বোন পড়াশোনা করে। খাওয়া, ঘুমনোও একই সঙ্গে। কৃষ্ণকলি বলল, "ভবিষ্যতে ক্রিকেটার হতে চাই। আমি আর বোন দু’জনে দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই।’’ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বাড়ির কাছে কন্টাই স্পোর্টস অ্যসোসিয়েশনের মাঠে প্রশিক্ষণ নেয় দু’জনেই। রবিবার এবং বুধবার রাতে মাঠে গিয়ে প্রশিক্ষকের কাছে ক্রিকেট খেলার তালিম নেয়। পড়াশোনার ফাঁকে চলে অনুশীলন। দুই মেয়েকে বল করে অনুশীলনে সাহায্য় করেন বাবা।
মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পরেই একাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছে দুই বোন। তবে পড়া শেষ হলেই টিভিতে ক্রিকেট দেখা দু’জনের সবচেয়ে পছন্দের। আইপিএলের মরসুমে কলকাতার নাইট রাইডার্সের সমর্থনে টিভির সামনে বসে গলা ফাটায় দু’জনে। কথাকলি আর কৃষ্ণকলি দু’জনেরই প্রিয় ক্রিকেটার হলেন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর।
কী ভাবে সাফল্য এল মাধ্যমিকে? কৃষ্ণকলি বলছে, "মা বাড়িতে ইংরেজি পড়াতেন। বাকি সমস্ত বিষয়ে প্রাইভেট টিউশন ছিল। দিনে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা পড়তাম।" তবে মেধা তালিকায় স্থান হবে কিনা তা নিয়ে অবশ্য আশাবাদী ছিল না কৃষ্ণকলি।