‘প্রচেষ্টা’র ফর্ম নেওয়ার ভিড় তমলুক জেলাশাসক দফতরে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের জেরে কাজ হারানো ব্যক্তিদের অর্থ সাহায্য করতে ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পে আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে জেলাশাসক বা মহকুমাশাসকের দফতরে। সোমবার এই আবেদন জমা দিতে গিয়ে লম্বা লাইন পড়ল জেলাশাসকের অফিস চত্বরে। প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। যার জেরে ‘রেড জোন’ হিসাবে ঘোষিত জেলায় সরকারি কাজে করোনা সতর্কতা বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, আজ এই প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে ফিরে যেতে হয় অনেককে। আবেদন জমা দিতে লোকজনের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিন ফর্ম জমা দিতে আসা তমলুক পুরসভার রত্নালি এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, ‘‘করোনার জন্য কাজ হারানো ব্যক্তিদের রাজ্য সরকার এক হাজার টাকা করে দেবে জানিয়েছে। তাই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আজ কিছু ফর্ম জমা নেওয়ার পর জানানো হয়, আজ আর ফর্ম জমা নেওয়া হবে না। আগামীকাল সকাল ৯ টা থেকে ১০ টার মধ্যে আসতে বলা হয়েছে। বাধ্য হয়ে আজ ফর্ম জমা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’’
তবে এ দিনই পরে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘প্রচেষ্টার’ ফর্ম জমা নেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে। তমলুকের রাধাবল্লভপুরের নীরজ খাটুয়া বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ থাকায় খুব সমস্যায় পড়েছি। সরকার থেকে এক হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাই ফর্ম জমা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু ফর্ম জমা না নেওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে। তবে যা ভিড় হয়েছিল, তাতে করোনা সতর্কতার কোনও বিধিই মানা হয়নি।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় লকডাউনে কাজ বন্ধ থাকায় অসংগঠিত ক্ষেত্রের যে সব শ্রমিক পরিবার সমস্যায় পড়েছেন তাঁদের আর্থিক সাহায্য দিতে রাজ্য সরকার ওই প্রকল্প চালু করেছে। এই সব শ্রমিক পরিবারের উপার্জনকারী একজন ব্যক্তি প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। তবে সরকারি কোনও সামাজিক প্রকল্পে ভাতা প্রাপক হলে আবেদন করা যাবে না। প্রকল্পে আবেদন করতে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জেলাশাসক বা মহকুমা শাসকের অফিসে জমা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ জেলাশাসকের অফিসে ফর্ম জমা দিতে এসেছিলেন। লোকজনের ভিড়ে লাইনে দাঁড়ানোর সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল না বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ মোতায়েন ছিল।